খাদ্যে রাসায়নিক দূষণ by নওরীন ওশিন

খাদ্য দূষণ নিয়ে সবাই শঙ্কিত। দেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য অধিক উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষিজমিতে ব্যবহৃত হচ্ছে নানা ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ এবং কীটনাশক।
দেশের মানুষের প্রতিদিনের ভিটামিনের চাহিদা ও অন্যান্য খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে বিভিন্ন শাকসবজি ও ফলমূল। কিন্তু বাজারের এসব শাকসবজি ও ফলমূল নানা রকম বিষে পরিপূর্ণ। যদিও বাইরে থেকে এগুলোকে যথেষ্ট সতেজ দেখায়। ফল বড় হওয়ার পরপরই তা দ্রুত পাকানোর জন্য ও পচন রোধ করার জন্য নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়, যা মানবজীবনের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বিশেষ করে কমলা, আপেল, আঙুর, আনারস, তরমুজ, মালটা, কলা, পেঁপে, টমেটো ইত্যাদি ফলে ব্যাপকভাবে ফরমালিন প্রয়োগ করা হয়, যা মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ফল দ্রুত বৃদ্ধি ও পাকানোর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ক্যালসিয়াম কার্বাইড। বাজারে যেসব ফল খুব সহজেই আমদানি হচ্ছে কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোয় সেসব ফল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশের শহর ও গ্রামের ফলের দোকানগুলো এসব বিষাক্ত ফলে সজ্জিত। কিন্তু বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই যে, এসব ফল বিষাক্ত।
এসব বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য খুব দ্রুত আমাদের খাদ্যচক্রে প্রবেশ করে। প্রবেশ করে আমাদের রক্তে। ফলে আমরা আক্রান্ত হচ্ছি জন্ডিস, ক্যান্সার, অ্যাজমাসহ নানা রকম চর্ম রোগে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির সুবাদে কলেরা, বসন্ত, টাইফয়েডের মতো সংক্রামক রোগ থেকে আমরা রক্ষা পেলেও খাদ্যের বিষক্রিয়ার ফলে আমাদের জীবননাশ করছে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মতো নানা অসংক্রামক রোগ। কিডনিকে অকেজো করে দিচ্ছে এসব বিষাক্ত খাবার। এসব দূষিত খাবারের কারণে আমাদের দেশে জন্মগত প্রতিবন্ধী শিশুর সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলছে। মানুষ ভুগছে নানা রকম স্নায়বিক সমস্যায়। শাকসবজি-ফলমূল ছাড়াও অন্যান্য খাদ্যে মিশ্রিত হচ্ছে নানা ক্ষতিকর পদার্থ। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
nawrinoshin@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.