দুর্নীতিগ্রস্ত এমপিদের সরানোর সুযোগ পাবেন ব্রিটিশ ভোটাররা

পার্লামেন্ট সদস্যদের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ উঠলে তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হতে পারে ব্রিটেনের ভোটারদের। অভিযোগের সমর্থনে নির্দিষ্টসংখ্যক ভোটারের স্বাক্ষর জমা হলে উপনির্বাচনের আয়োজন করা হতে পারে।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের সদস্যরাও একই ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থার শিকার হতে পারেন। ব্রিটিশ উপপ্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ সম্প্রতি এসব তথ্য জানিয়েছেন। পার্লামেন্টের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে ব্রিটিশ সরকার ২০১৫ সালের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট আইনে পরিবর্তন আনবে বলেও জানান তিনি।
ব্রিটিশ এমপিদের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কয়েকটি অভিযোগ সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসের সদস্য প্যাট্রিক মার্সার ও উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির সদস্য প্যাট্রিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি বেসরকারি একটি ফার্মের কাছ থেকে ২৪ হাজার পাউন্ড নেওয়ার বিনিময়ে কমনওয়েলথে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ ফিজির সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া-সংক্রান্ত প্রশ্ন উত্থাপন করেন পার্লামেন্টে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০০৯ সালে কমনওয়েলথ ফিজির সদস্য পদ স্থগিত করে। এই সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে সর্বদলীয় একটি জোটও গঠন করেন প্যাট্রিক। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দলের হুইপের কাছে পদত্যাগপত্রও জমা দেন তিনি। আর তিন লর্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, সাংবাদিকদের সামনে নিজেদের লবিস্ট প্রমাণের অপচেষ্টা চালান তাঁরা। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সৌরবিদ্যুৎ কম্পানির পক্ষে কথা বলার জন্য সর্বদলীয় পার্লামেন্টারি কমিটি গঠনের চেষ্টা করছেন বলেও দাবি করেন।
ব্রিটিশ উপপ্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন জোট সরকারের শরিক দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান নিক ক্লেগ বলেন, 'ওয়েস্টমিনস্টার (ব্রিটিশ সরকারের কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল) এমন একটি জায়গায় পরিণত হয়েছে, যেখানে ক্ষমতা পুঞ্জীভূত হচ্ছে, অস্বচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যাঁরা এসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাঁদেরও যথাযথভাবে জবাবদিহি করা হচ্ছে না। আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরেই ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে।'
ক্লেগ জানান, সরকার ভোটারদের হাতে এমপিদের জবাবদিহির ক্ষমতা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। কোনো এমপির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠলে তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করার বিধান প্রণয়নের উদ্যোগ নিচ্ছে। কোনো নির্বাচনী এলাকার নির্দিষ্টসংখ্যক ভোটারের সমর্থনে অভিযুক্ত এমপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার সুযোগ রাখা হবে। উপনির্বাচনেরও ব্যবস্থা রাখা হবে। লর্ড সভার সদস্যদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের ব্যবস্থা চালু হতে পারে। সরকার লবিস্ট হিসেবে কাজ করার জন্য নতুন নিবন্ধন বিধিমালাও চালু করতে যাচ্ছে। ২০১৫ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরকার এসব নিয়ম প্রবর্তনের চেষ্টা করবে বলে জানান ক্লেগ। সূত্র : গার্ডিয়ান।

No comments

Powered by Blogger.