চরাচর-গোলাপ জাম by ফখরে আলম

পাকা সুস্বাদু গোলাপ জাম এখন আর দেখতেই পাওয়া যায় না। ফলটি যাঁদের পরিচিত, তাঁরা প্রায়ই এ নিয়ে আফসোস করেন। যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দীপাড়ার ব্যবসায়ী আব্বাস আলী বিশ্বাসের বাগানে প্রায় হারিয়ে যাওয়া ফল গোলাপ জামের সন্ধান পাওয়া গেছে।
১২-১৪ ফুট দীর্ঘ গাছটিতে শত শত গোলাপ জাম ধরেছে। গোলাপি সাদা রঙের ফলটি দেখতে অনেকটা জামরুলের মতো হলেও পাকা ফলে গোলাপ ফুলের খুশবু রয়েছে। সম্ভবত এ কারণেই এই ফলটির নাম হয়েছে গোলাপ জাম। এক সময় রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, সিলেট, মৌলভীবাজার, রাজশাহী ও যশোর অঞ্চলে গোলাপ জামের গাছ দেখা গেলেও এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
গোলাপ জামের ইংরেজি নাম rose apple, বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium jambose। এ ছাড়া মালাইয়া আপেল, মালাবার পাম, জাম্বু, চম্পা নামেও গোলাপ জাম পরিচিত। গোলাপ জাম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গাছ। জামরুলের মতো দেখতে। ফলটি হলুদ ও গোলাপ সাদা রঙের হয়। ফলের মাথায় একটি লম্বা শুঁড় থাকে। ফলটি পাকলে গোলাপ ফুলের মতো খুশবু বের হয়। গ্রীষ্মের ফল। পাকা ফল তুলতুলে হয়ে যায়। গাঢ় সবুজ পাতার রং। একেবারে জামের মতো পাতা। প্রতিটি ফলের ভেতরে এক থেকে দুটি বীজ থাকে। এই বীজ থেকেই বংশবিস্তার হয়। গোলাপ জামে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ক্যারোটিন, ভিটামিন-সি রয়েছে। পেটের পীড়া, পাতলা পায়খানা, বমিভাব এই ফল খেলে দূর হয়। এ ছাড়া এর ছাল, পাতা ডায়াবেটিসের জন্য খুবই উপকারী। আব্বাস আলী বিশ্বাস বললেন, 'আমার গোলাপ জাম গাছের বয়স তিন বছর। এরই মধ্যে গাছটি প্রায় ১৫ ফুট লম্বা হয়েছে। গতবছর থেকে ফল ধরছে। এবার প্রচুর ফল ধরেছে। ফলের স্বাদ টক-মিষ্টি। হালকা মিষ্টিও বলা যায়।' এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে যশোর হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ আমিনুল ইসলাম বলেন, 'গোলাপ জাম গাছ এখন আর খুব একটা দেখা যায় না। আমরা বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে এই গাছটিসহ অন্যান্য হারিয়ে যাওয়া ফলগাছ বসতবাড়ির আঙিনায় রোপণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। গোলাপ জাম দেখতে খুবই সুন্দর। এর কিছু ঔষধি গুণও রয়েছে।'
ফখরে আলম

No comments

Powered by Blogger.