পদ্মা সেতু প্রকল্প- বিশ্বব্যাংকের অর্থ না পেলে বিকল্প ব্যবস্থা: মুহিত
পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের ব্যাপারে জানুয়ারির মধ্যেই বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত জানতে চায় সরকার। নইলে বিকল্প উপায় দেখা হবে। সচিবালয়ের নিজ কার্যালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন পেতে চায় সরকার। কিন্তু সেতু নির্মাণকাজ শুরু করার এখনই সময়। কারণ, এখন শুষ্ক মৌসুম চলছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মনোভাব বিভিন্নভাবে বিশ্বব্যাংককে জানানো হয়েছে। কয়েক দিন আগে বিশ্বব্যাংকে আমাদের নির্বাহী পরিচালক সংস্থাটির সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তখন তাঁর অভিব্যক্তিও ছিল ইতিবাচক। অর্থাৎ বিশ্বব্যাংকের সভাপতিও চান পদ্মা সেতু প্রকল্পটি এগিয়ে যাক।’দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের প্যানেল দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে উল্লেখ করে মুহিত বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ওই প্যানেলের কোনো যোগাযোগ নেই, যোগাযোগ রাখতেও চাই না। কারণ, তদন্তের বিষয়টি একান্তই বিশ্বব্যাংকের প্যানেল ও দুদকের বিষয়। আমরা শুধু চাই এ মাসের মধ্যেই বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত। নইলে বিকল্প উপায় দেখতে হবে।’
বিকল্প উপায় কী হতে পারে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অন্য অর্থায়নকারীরা আছে। তাদেরকে অনুরোধ করব বাড়িয়ে বিনিয়োগ করতে। আর আমাদের নিজেদের বিনিয়োগ তো আছেই।’
বিশ্বব্যাংকের চিঠির জবাব দুদক চেয়ারম্যানকে দ্রুত দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে বলেও সাংবাদিকদের জানান অর্থমন্ত্রী। এদিকে দুদক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ দলের চিঠির জবাব তৈরি করা হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ যাচাই-বাছাই করে চিঠি পাঠাতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের মনোনীত বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান লুই মোরেনো ওকাম্পো ৯ জানুয়ারি দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমানকে একটি চিঠি দেন। তাতে পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে দুদকের তদন্ত ও মামলাসংক্রান্ত কিছু বিষয়ের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। দুদক এসব ব্যাখ্যার জবাব ওকাম্পোকে পাঠাবে।
দুদক সূত্র জানান, চিঠিতে বাংলাদেশের আইন, দুদক আইন, জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মামলায় আসামি না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা থাকছে। সাবেক সেতুসচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যসচিব কাজী ফেরদাউসকে রিমান্ডে নিয়ে দুদক যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, তারও বিস্তারিত বিবরণও থাকবে চিঠিতে।
কানাডা ব্যাখ্যা চেয়েছে: কানাডিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তা রমেশ শাহর ডায়েরির অনুলিপি পেতে এবং পদ্মা সেতু মামলার কানাডিয়ান তিন নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক যে এমএলএআর (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট) পাঠিয়েছে, তার একটি জবাব এসেছে দুদকে। এ সম্পর্কে এম সাহাবুদ্দিন বলেন, কানাডা সরকারের পক্ষে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) পাঠানো ওই চিঠিতে কিছু তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়েছে দুদকের কাছে। চিঠিতে দুর্নীতি ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দায়ের করা মামলার কপি, তথ্য সংগ্রহের জন্য দুদকের টিম কানাডায় গিয়ে কী কী কাজ করবে, তার একটি কর্মপরিকল্পনাও চাওয়া হয়। এ ছাড়া বিদেশ থেকে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণের নথি কোন আইনের আওতায় বাংলাদেশে গ্রহণ করা হয়, তারও একই অনুলিপি চেয়েছে কানাডা।
No comments