ভারতীয় জাল মুদ্রার কারবার- পাকিস্তানভিত্তিক বিভিন্ন চক্র সক্রিয় বাংলাদেশে by গোলাম মর্তুজা
ভারতীয় জাল মুদ্রা বাজারজাতকরণে বাংলাদেশের ভূমিকে ব্যবহার করছে পাকিস্তানভিত্তিক কয়েকটি চক্র। এ রকম কয়েকটি মুদ্রা পাচারকারী চক্রের হোতারা বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছেন। অল্প কিছুদিন পর তাঁরা আবার জামিনে ছাড়া পেয়েও গেছেন।
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী একাধিক সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে ছাপানো জাল মুদ্রা বাংলাদেশের ওপর দিয়ে তা ভারতে পাচার ও বাজারজাত করে এমন তিনটি চক্র শনাক্ত করা হয়েছে। এ তিনটি চক্রের প্রধানেরা হলেন: সোলায়মান মজুমদার, মো. মাহাতাব ও ইমরান হোসেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, ডিবি একাধিকবার এসব চক্রের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাঁরা উপমহাদেশের একটি দেশ থেকে জাল মুদ্রার চালান এ দেশে আনেন।
ডিবি সূত্র জানিয়েছে, সবচেয়ে বড় চক্রের প্রধান সোলায়মান মজুমদারকে ২০১০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরের মাসেই তিনি সহযোগীসহ জামিনে ছাড়া পান। এরপর গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর রাতে আবারও তাঁকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। কিছুদিন পর আবারও আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে যান তিনি।
ডিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এই সোলায়মান মজুমদারের সঙ্গে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) কারাবন্দী আমির মাওলানা সাইদুর রহমানের সহযোগী মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এমনকি সোলায়মানের নেতৃত্বাধীন চক্রের কাছ থেকে জেএমবি একাধিকবার আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল বলে রিমান্ডে সাইদুর রহমান জানিয়েছিল। অবশ্য সোলায়মান মজুমদারকে দুই দফা গ্রেপ্তার করা হলেও তাঁর কাছ থেকে খুব বেশি তথ্য বের করতে পারেনি ডিবি।
জাল মুদ্রার কারবারি আরেকটি চক্রের প্রধান হলেন ইমরান হোসেন (৪১)। ১০ কোটি রুপির ভারতীয় জাল মুদ্রাসহ তাঁকে ও তাঁর দুই সহযোগীকে গত বছর ২৯ মার্চ রাজধানীর পলওয়েল মার্কেট থেকে র্যাব গ্রেপ্তার করে।
র্যাব সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান জানিয়েছেন, পাকিস্তান থেকে সমুদ্রপথে আমদানি করা কাপড়ের গাঁইটের সঙ্গে জাল ভারতীয় মুদ্রার চালান আসে। তা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস করে কাভার্ড ভ্যানে আনা হয় রাজধানীর পলওয়েল মার্কেটে। পাকিস্তানের তাইমুর ও আসলাম চৌধুরী নামের দুই ব্যক্তি সমুদ্রপথে এসব জাল মুদ্রা সরবরাহ করেন বলে ইমরান র্যাবকে বলেছিলেন।
ইমরানের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. আলাউদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রেপ্তারের কিছুদিন পর ইমরানেরসহ তিনজনই জামিনে মুক্তি পেয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন।’
আরেকটি চক্রের প্রধান মাহাতাব পৌনে তিন কোটি রুপি জাল মুদ্রাসহ গত বছরের ২ নভেম্বর র্যাবের কাছে ধরা পড়েন। মুদ্রার চালান নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়ার সময় গাজীপুরে মহাসড়ক থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এ সময় তাঁর দুই সহযোগীও ধরা পড়েন।
এর আগে, ২০০৯ সালে ডিসেম্বরে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ভারতীয় নাগরিক রুবিনা হোসেনকে। তাঁর কাছ থেকে তথ্য পেয়ে পরের মাসে মালিবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পাকিস্তানি নাগরিক সাব্বির আলী, মো. দানিশ ও তাঁর স্ত্রী ফাতিমাকে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুই দিন পর রাজধানীর রায়েরবাগ থেকে ৫০ হাজার রুপির জাল মুদ্রাসহ জাহিদ হাসান (৫২) নামের আরেক পাকিস্তানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১০ সালের ১ এপ্রিল এই চক্রের আরেক নেতা শফিক মাহমুদ ওরফে সেলিমকে একটি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করে ডিবি। এঁরা সবাই একই চক্রের সদস্য বলে জানিয়েছে ডিবি। এঁরা নিজেদের চক্রের নাম দিয়েছে এফআইসি গ্রুপ (ফেক ইন্ডিয়ান কারেন্সি গ্রুপ)।
অভিযোগ রয়েছে, পাকিস্তানের একটি গোয়েন্দা সংস্থার তত্ত্বাবধানে এ রকম অনেক চক্র এ দেশে সক্রিয় রয়েছে। এসব চক্রের তদারকিও করেন পাকিস্তানি নাগরিকেরা।
ডিবি সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া এসব চক্রের নেতারা রিমান্ডে জানিয়েছেন, ভারতীয় জাল রুপি পাকিস্তানের করাচিতে ছাপানো হয়। তা আকাশপথে বিশেষ লাগেজে আর সমুদ্রপথে কাপড়ের চালানের সঙ্গে এ দেশে আনা হয়। আকাশপথে একেকটি চালানে দেড় থেকে আড়াই কোটি রুপি আর সমুদ্রপথে ১২ থেকে ১৩ কোটি রুপি আনা হতো।
একই সূত্র জানায়, পাকিস্তানের বিমানবন্দরে এসব মুদ্রার চালান যাতে আটকানো না হয়, সে ব্যবস্থা করা আছে। বাহকের ভিসা, উড়োজাহাজের টিকিটসহ ভ্রমণের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন চক্রের নেতারা। ঢাকায় আসার পর আরেকটি দল বাহককে বিমানবন্দর থেকে নির্দিষ্ট হোটেলে পৌঁছে দেয়। আর হোটেলে থেকে আরেক দল এসে মুদ্রার চালানটি নিয়ে যায়।
বিভিন্ন সময় ধরা পড়া পাচারকারীরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, জাল রুপির বেশির ভাগই সরাসরি পাচার হয়ে যায় ভারতে। সামান্য একটা অংশ বাংলাদেশের বাজারে ঘোরে। এখানে চক্রের প্রধানদের কাছ থেকে এক লাখ জাল রুপির বান্ডেল ২৫ হাজার টাকা দরে কেনেন খুচরা বিক্রেতারা। পরের ধাপে এর দাম হয়ে যায় ৩০ হাজার টাকা। সীমান্তবর্তী গরুর ব্যবসায়ীরা ৩৫ হাজার টাকায় এক বান্ডিল কেনেন।
র্যাব ও ডিবি কর্মকর্তারা জানান, পাকিস্তানে ছাপানো এসব জাল মুদ্রার মান অনেক ভালো। ফলে বাংলাদেশে ধরা পড়ার পর, তা জাল প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, ডিবি একাধিকবার এসব চক্রের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাঁরা উপমহাদেশের একটি দেশ থেকে জাল মুদ্রার চালান এ দেশে আনেন।
ডিবি সূত্র জানিয়েছে, সবচেয়ে বড় চক্রের প্রধান সোলায়মান মজুমদারকে ২০১০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরের মাসেই তিনি সহযোগীসহ জামিনে ছাড়া পান। এরপর গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর রাতে আবারও তাঁকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। কিছুদিন পর আবারও আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে যান তিনি।
ডিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এই সোলায়মান মজুমদারের সঙ্গে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) কারাবন্দী আমির মাওলানা সাইদুর রহমানের সহযোগী মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এমনকি সোলায়মানের নেতৃত্বাধীন চক্রের কাছ থেকে জেএমবি একাধিকবার আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল বলে রিমান্ডে সাইদুর রহমান জানিয়েছিল। অবশ্য সোলায়মান মজুমদারকে দুই দফা গ্রেপ্তার করা হলেও তাঁর কাছ থেকে খুব বেশি তথ্য বের করতে পারেনি ডিবি।
জাল মুদ্রার কারবারি আরেকটি চক্রের প্রধান হলেন ইমরান হোসেন (৪১)। ১০ কোটি রুপির ভারতীয় জাল মুদ্রাসহ তাঁকে ও তাঁর দুই সহযোগীকে গত বছর ২৯ মার্চ রাজধানীর পলওয়েল মার্কেট থেকে র্যাব গ্রেপ্তার করে।
র্যাব সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান জানিয়েছেন, পাকিস্তান থেকে সমুদ্রপথে আমদানি করা কাপড়ের গাঁইটের সঙ্গে জাল ভারতীয় মুদ্রার চালান আসে। তা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস করে কাভার্ড ভ্যানে আনা হয় রাজধানীর পলওয়েল মার্কেটে। পাকিস্তানের তাইমুর ও আসলাম চৌধুরী নামের দুই ব্যক্তি সমুদ্রপথে এসব জাল মুদ্রা সরবরাহ করেন বলে ইমরান র্যাবকে বলেছিলেন।
ইমরানের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. আলাউদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রেপ্তারের কিছুদিন পর ইমরানেরসহ তিনজনই জামিনে মুক্তি পেয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন।’
আরেকটি চক্রের প্রধান মাহাতাব পৌনে তিন কোটি রুপি জাল মুদ্রাসহ গত বছরের ২ নভেম্বর র্যাবের কাছে ধরা পড়েন। মুদ্রার চালান নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়ার সময় গাজীপুরে মহাসড়ক থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এ সময় তাঁর দুই সহযোগীও ধরা পড়েন।
এর আগে, ২০০৯ সালে ডিসেম্বরে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ভারতীয় নাগরিক রুবিনা হোসেনকে। তাঁর কাছ থেকে তথ্য পেয়ে পরের মাসে মালিবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পাকিস্তানি নাগরিক সাব্বির আলী, মো. দানিশ ও তাঁর স্ত্রী ফাতিমাকে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুই দিন পর রাজধানীর রায়েরবাগ থেকে ৫০ হাজার রুপির জাল মুদ্রাসহ জাহিদ হাসান (৫২) নামের আরেক পাকিস্তানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১০ সালের ১ এপ্রিল এই চক্রের আরেক নেতা শফিক মাহমুদ ওরফে সেলিমকে একটি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করে ডিবি। এঁরা সবাই একই চক্রের সদস্য বলে জানিয়েছে ডিবি। এঁরা নিজেদের চক্রের নাম দিয়েছে এফআইসি গ্রুপ (ফেক ইন্ডিয়ান কারেন্সি গ্রুপ)।
অভিযোগ রয়েছে, পাকিস্তানের একটি গোয়েন্দা সংস্থার তত্ত্বাবধানে এ রকম অনেক চক্র এ দেশে সক্রিয় রয়েছে। এসব চক্রের তদারকিও করেন পাকিস্তানি নাগরিকেরা।
ডিবি সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া এসব চক্রের নেতারা রিমান্ডে জানিয়েছেন, ভারতীয় জাল রুপি পাকিস্তানের করাচিতে ছাপানো হয়। তা আকাশপথে বিশেষ লাগেজে আর সমুদ্রপথে কাপড়ের চালানের সঙ্গে এ দেশে আনা হয়। আকাশপথে একেকটি চালানে দেড় থেকে আড়াই কোটি রুপি আর সমুদ্রপথে ১২ থেকে ১৩ কোটি রুপি আনা হতো।
একই সূত্র জানায়, পাকিস্তানের বিমানবন্দরে এসব মুদ্রার চালান যাতে আটকানো না হয়, সে ব্যবস্থা করা আছে। বাহকের ভিসা, উড়োজাহাজের টিকিটসহ ভ্রমণের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন চক্রের নেতারা। ঢাকায় আসার পর আরেকটি দল বাহককে বিমানবন্দর থেকে নির্দিষ্ট হোটেলে পৌঁছে দেয়। আর হোটেলে থেকে আরেক দল এসে মুদ্রার চালানটি নিয়ে যায়।
বিভিন্ন সময় ধরা পড়া পাচারকারীরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, জাল রুপির বেশির ভাগই সরাসরি পাচার হয়ে যায় ভারতে। সামান্য একটা অংশ বাংলাদেশের বাজারে ঘোরে। এখানে চক্রের প্রধানদের কাছ থেকে এক লাখ জাল রুপির বান্ডেল ২৫ হাজার টাকা দরে কেনেন খুচরা বিক্রেতারা। পরের ধাপে এর দাম হয়ে যায় ৩০ হাজার টাকা। সীমান্তবর্তী গরুর ব্যবসায়ীরা ৩৫ হাজার টাকায় এক বান্ডিল কেনেন।
র্যাব ও ডিবি কর্মকর্তারা জানান, পাকিস্তানে ছাপানো এসব জাল মুদ্রার মান অনেক ভালো। ফলে বাংলাদেশে ধরা পড়ার পর, তা জাল প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
No comments