আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অগ্রদূত

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অগ্রদূত সুনীল গাঙ্গুলির জন্ম বাংলাদেশের ফরিদপুরে ১৯৩৪-এর ৭ সেপ্টেম্বর। একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, সাংবাদিক ও নিবন্ধকার এই জনপ্রিয় সাহিত্যিক মাত্র চার বছর বয়সে কলকাতায় চলে আসেন।

তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এম.এ. পাশ করেন। গৃহ শিক্ষকতা দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু। পরে আনন্দবাজার পত্রিকায় যোগ দেন।
১৯৫৩ সাল থেকে তিনি কৃত্তিবাস  নামে একটি কবিতা পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। এই পত্রিকাটি তরুণ কবিদের মুখপত্র হিসেবে সবার মনোযোগ কাড়ে। ১৯৫৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ একা ও কয়েকজন  প্রকাশিত হয়।

তার প্রথম উপন্যাস `আত্মপ্রকাশ` ১৯৬৬ সালে শারদীয়া "দেশ" পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়।

তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ হল- আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি, যুগলবন্দী (প্রয়াত কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে), হঠাৎ নীরার জন্য, রাত্রির রঁদেভূ।

তার উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে অর্ধেক জীবন, অরণ্যের দিনরাত্রি, অর্জুন, প্রথম আলো, সেই সময়, পূর্ব পশ্চিম, ভানু ও রাণু, মনের মানুষ  ইত্যাদি৷

শিশু ও  কিশোর সাহিত্যেও "কাকাবাবু-সন্তু" নামে এক জনপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজের রচয়িতা তিনি।   তাঁর প্রথম কিশোর উপন্যাস "ভয়ংকর সুন্দর" । এছাড়া সত্যি রাজপুত্র , সবুজ দ্বীপের রাজা উল্লেখযোগ্য।

"নীললোহিত", "সনাতন পাঠক" ও "নীল উপাধ্যায়" ছদ্মনামেও লিখেছেন তিনি৷। তার একাধিক কাহিনী অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে। যার মধ্যে অরণ্যের  দিনরাত্রি ও প্রতিদ্বন্দ্বী উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ করেন  সত্যজিৎ রায়। সাম্প্রতিককালে তার বাউল সম্রাট লালন শাহর জীবন নিয়ে লেখা মনের মানুষ নিয়ে চলচ্চিত্র করেন গৌতম ঘোষ।

তিনি স্বাতী বন্দোপাধ্যায়কে বিয়ে করেন। ১৯৬৭ সালে তার একমাত্র পুত্র
সৌভিক গাঙ্গুলি জন্মগ্রহণ নেয়।

তিনি দুবার আনন্দ পুরস্কার (১৯৭২, ১৯৮৯) ভারতের জাতীয় সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার, (১৯৮৫)সহ আরো অনেক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।

২৩ অক্টোবর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ৫ মিনিটে কলকাতা গড়িয়াহাট রোডে পারিজাত অ্যার্পাটমেন্টে নিজ বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.