সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আর নেই

বাংলা ভাষার প্রখ্যাত কবি ও কথাসাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আর নেই। সোমবার রাত দুটার দিকে কলকাতায় নিজ বাড়িতে ঘুমের মধ্যেই মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।

বিশিষ্ট এ কবির মরদেহ পিস হ্যাভেনে রাখা হবে। বুধবার তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
সুনীল গঙ্গোপাধায় ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সাংবাদিক ও কলাম লেখক। তার জন্ম ১৯৩৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশের ফরিদপুরে। পরিবারের সঙ্গে কলকাতা চলে যান মাত্র চার বছর বয়সেই। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি নেন ১৯৫৪ সালে।

এর ঠিক আগের বছর কবিতার পত্রিকা কৃত্তিবাসের সম্পাদনা শুরু করেন সুনীল। ১৯৫৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একা ও কয়েকজন’ এবং ১৯৬৬ সালে ‘আত্মপ্রকাশ’ নামে প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয়।

নীললোহিত, সনাতন পাঠক, নীল উপাধ্যায় ছদ্মনামেও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লেখালেখি করেছেন। তিনি ভারতের জাতীয় সাহিত্যপ্রতিষ্ঠান সাহিত্য আকাদেমি ও পশ্চিমবঙ্গ শিশুকিশোর আকাদেমির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে, ‘আমি কী রকমভাবে বেঁচে আছি’, ‘যুগলবন্দী’, হঠাৎ নীরার জন্য, অর্ধেক জীবন, অরণ্যের দিনরাত্রি, প্রথম আলো, সেই সময়, পূর্ব পশ্চিম, মনের মানুষ ইত্যাদি।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের অরণ্যের দিনরাত্রি ও প্রতিদ্বন্দ্বী নিয়ে সত্যজিৎ রায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। লালনকে নিয়ে লিখিত মনের মানুষ উপন্যাসটি গৌতম ঘোষ চলচ্চিত্রায়ন করেছেন। এ ছাড়াও তার আরো অনেক লেখা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।

তার সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতি স্বরূপ আনন্দ পুরস্কার (১৯৭২), সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার (১৯৮৫), দ্য হিন্দু লিটারেরি পুরস্কার (২০১১) অর্জন করেছেন।

১৯৬৭ সালে তিনি স্বাতী বন্দোপাধ্যায়কে বিয়ে করেন। তার একমাত্র সন্তান সৌভিক গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি দুই শতাধিক গ্রন্থের রচয়িতা।

No comments

Powered by Blogger.