মন্দিরে যুবকের শিরোচ্ছেদ, বন্ধুর দাবি ‘বলিদান’

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড মডেল থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা সামিউল আলম জানিয়েছেন, উপজেলার কুমিরা এলাকার একটি কালী মন্দিরের আঙিনা থেকে সোমবার সকাল ৮টার দিকে তারা মস্তকহীন একটি লাশ উদ্ধার করেন। নিহতের নাম টিটু আইচ। রক্তমাখা একটি শার্ট ও মাথা ছিন্ন করতে ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহতের বন্ধু এক যুবক দাবি করেছেন, তার বন্ধু স্বেচ্ছায় কালী দেবীর উদ্দেশ্যে নিজেকে বলি দিতে চাইলে তিনি এই বলিদানে ‘সহযোগিতা’ করেছেন।
বাবু নামের এই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আটক বাবু (২৯) সাংবাদিকদের জানান, ‘বলি’ হওয়া টিটু আইচ (২৭) ও তার মধ্যে বেশ বন্ধুত্ব ছিল। মাঝেমধ্যে দু’জনে মিলে এক সঙ্গে গাঁজা সেবন করতেন।

বাবু জানান, রোববার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে টিটু আইচ নিজেকে মা কালির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার ইছ্ছা পোষণ করে। এসময় দু’জনেই সেনবাড়ির কালী মন্দিরের আঙিনায় যান। এরপর টিটুর ইচ্ছানুযায়ী একটি ধারালো ধামা দিয়ে কুপিয়ে দেহ থেকে তার মস্তক বিচ্ছিন্ন করেন বাবু। পরে লাশটি মন্দিরের পাশে একটি জঙ্গলে লুকিয়ে রেখে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়েন।

পরে এলাকাবাসী শার্টটি দেখে চিনে ফেলে। সেই সূত্র ধরে বাবুকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ধর্মের নির্দেশ পালন (তার ভাষায়) করতে গিয়ে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।

তবে টিটুর বড় ভাই লিটু আইচ দ্বি-মত পোষণ করে বলেন, “ধর্মান্ধতার কারণে এ হত্যকাণ্ড ঘটেনি। টিটু স্থানীয় জিপিএইচ ইস্পাত কোম্পানিতে চাকরি করতেন। একবছর আগে মানসিকভাবে তিনি কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েন। সুস্থ থাকাবস্থায় অনেকেই তার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিল। সুস্থ হওয়ার পর ধারের টাকা চাইতে গিয়ে তাদের মাঝে কোনো মতবিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।’’

সীতাকুণ্ড কালি মন্দিরের পুরোহিত জানান, সনাতন ধর্মে এ ধরনের নরবলি দেয়ার কোনো বিধান নেই। হয়তো তারা দু’জনেই মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। যে কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।  

No comments

Powered by Blogger.