বিলাওয়াল জারদারিকে অপহরণের ষড়যন্ত্র হয়েছিল

পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারপারসন বিলাওয়াল জারদারিকে অপহরণের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল-কায়েদা ও পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক ই তালেবান (টিটিপি) পাকিস্তান এই ষড়যন্ত্র করে। গত সোমবার পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক এ তথ্য প্রকাশ করেন। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার রেহমান মালিক বলেছেন, পাকিস্তান সরকার তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে। তবে এর আগে তালেবানকে অস্ত্র ছেড়ে দিতে হবে।

জাতীয় ডেটাবেইস ও নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তর পরিদর্শনের সময় রেহমান মালিক সাংবাদিকদের জানান, তিনি প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বিলাওয়ালকে অপহরণের ষড়যন্ত্র করেন। দুটি সন্ত্রাসী সংগঠন করাচি থেকে তাঁকে অপহরণের পরিকল্পনা করেছিল। তিনি জানান, আল-কায়েদা ও টিটিপি পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। তবে তাদের ষড়যন্ত্র বানচাল করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিলাওয়াল জারদারি পাকিস্তানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত বেনজির ভুট্টোর বড় ছেলে।
রেহমান মালিক জানান, অপহূত শাহবাজ তাসির জীবিত আছেন। তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, পাঞ্জাবের সাবেক গভর্নর সালমান তাসিরের ছেলে শাহবাজ তাহিরকে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত এলাকার কোথাও আটকে রাখা হয়েছে। আমি সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে বলতে চাই, তাদের এই কাপুরুষোচিত কাজ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সরকারের অঙ্গীকার দুর্বল করতে পারবে না।’
লাহোরের গুলবার্গ এলাকা গত ২৬ আগস্ট থেকে শাহবাজ তাসিরকে অপহরণ করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে রেহমান মালিক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা ব্ল্যাক ওয়াটারের সঙ্গে তিনি কোনো কাজ করছেন না। এর আগে সিন্ধু প্রদেশের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুলফিকার মির্জা তাঁর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।
এর আগে জাতীয় ডেটাবেইস ও নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পাকিস্তান হকি ফেডারেশনের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেহমান মালিক বলেন, খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে শান্তি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। এ সময় তিনি দেশে খেলাধুলা সম্প্রচারের জন্য আরও স্পোর্টস চ্যানেল প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন। খেলাধুলার পরিবেশ নিশ্চিত ও কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। শান্তি ও সম্প্রীতির জন্য এটা প্রয়োজন।
গতকাল রেহমান মালিক সাংবাদিকদের বলেন, তালেবানকে অস্ত্র ছেড়ে দিতে হবে। আলোচনার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। তবেই আলোচনা হতে পারে। তারা যদি চিন্তা করে অস্ত্র না ছেড়েই সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে, তাহলে তা সম্ভব নয়।
এরই মধ্যে সরকার ও তালেবান পক্ষ আলোচনায় বসার ব্যাপারে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে বিশ্লেষকেরা তালেবানের আলোচনায় বসার ইঙ্গিতকে ভিন্নভাবে দেখছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মাহমুদ শাহ বলেন, আলোচনার আগে তালেবানকে সংবিধান মেনে নিয়ে অস্ত্র ছেড়ে দিতে বলেছে সরকার। কিন্তু জঙ্গিদের অন্য লক্ষ্য রয়েছে। তারা ক্ষমতা পেতে চায়। এই আলোচনাকে তারা রসিকতা হিসেবে নিয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.