পাকিস্তানে তালেবান দমনে ব্যাপক সেনা অভিযান

তালেবান জঙ্গিদের উচ্ছেদে আফগান সীমান্তবর্তী উপজাতি অধ্যুষিত কুররাম এলাকায় গত সোমবার অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তানের সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী। হেলিকপ্টার গানশিপ ও যুদ্ধবিমান নিয়ে হাজার হাজার সেনাসদস্য দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে গিয়ে কুররামে অভিযান শুরু করেছে।
হাকিমুল্লাহ মেহসুদের নেতৃত্বাধীন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কুররাম। আল-কায়েদার সঙ্গে সংগঠনটির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। অভিযানের প্রাথমিক তথ্যমতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী এ পর্যন্ত ছোটখাটো কয়েকটি প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। তবে একজন সামরিক কর্মকর্তা বলেন, ‘তালেবান জঙ্গিরা কোনো প্রতিরোধ দেখায়নি।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রাণের ভয়ে কুররাম থেকে শত শত পরিবারের হাজার হাজার সদস্য পালিয়ে গেছে। অনেকে ওই অঞ্চলের অন্যতম নগর সাদ্দার ত্রাণশিবিরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। অভিযানের খবর পেয়ে পালিয়েছে অনেক জঙ্গিও।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, সেনাসদস্যরা কুররামের মুশাত, মাসোজাই ও আলি শেরজাওয়ি পার্বত্য এলাকায় অগ্রসর হয়েছে। মানাতো ও জাইমুখেত এলাকায়ও হেলিকপ্টার থেকে তাদের নামতে দেখা গেছে। প্রতিটি এলাকাই তালেবানের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেনাসদস্যরা পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান নিয়ে প্রধান প্রধান রাস্তায় নজরদারি করছে।
পাকিস্তান সরকার কুররামের ৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রণক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করেছে। অভিযানের আগে সেখানে কারফিউ জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যোগাযোগের সব পথ। টেলিফোন যোগাযোগও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে কুররামে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
কুররামে জঙ্গি তৎপরতা ছাড়াও শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচণ্ড বিরোধ রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যস্থতায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কুররাম থেকে জঙ্গি নির্মূলের অভিযানে নেমেছে শিয়া সম্প্রদায়ও। তিন বছর ধরে তারা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে।

No comments

Powered by Blogger.