থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে আবারও সংঘর্ষ

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বিরোধপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় গতকাল রোববার তৃতীয় দিনের মতো দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এদিকে সংঘাত অবসানে দুই দেশের প্রতি অস্ত্রবিরতি ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন।
গত শুক্রবার ভোরে থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সুরিন প্রদেশের বিতর্কিত সীমান্তে তা মোয়েং ও তা ক্রাবেই মন্দিরসংলগ্ন জঙ্গল এলাকায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। গত তিন দিনের দুই পক্ষের সংঘর্ষে কম্বোডিয়ার ছয় সেনা ও থাইল্যান্ডের চার সেনা নিহত হয়।
গতকালের সংঘর্ষে হতাহতের কোনো তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সংঘাতপূর্ণ সীমান্ত এলাকার দুই দেশেরই কয়েক হাজার গ্রামবাসীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তা মোয়েং মন্দিরসংলগ্ন এলাকা দখলে নিতে থাই সেনারা গতকাল সকাল থেকে শত শত গোলা বর্ষণ করছে। সেনারা বেসামরিক নাগরিকদের বসবাসের এলাকায় এসব হামলা চালাচ্ছে।
থাইল্যান্ডের সেনা মুখপাত্র সানসেরন এএফপিকে বলেছেন, তাঁদের সেনারা আগে হামলা করেননি। কম্বোডিয়ার সেনাদের হামলার পাল্টা জবাব দিচ্ছে তাঁদের বাহিনী।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আপিসিত ভেজ্জাজিওয়া বলেছেন, তাঁর দেশ বিষয়টি নিয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বসতে চাচ্ছিল। কিন্তু কম্বোডিয়া এখন আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশে সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে।
তা ক্রাবেই এলাকার প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৯০০ বছরের পুরোনো প্রিয়া বিহার মন্দির অবস্থিত। গত ফেব্রুয়ারিতে সেখানে দুই দেশের সেনা সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন নিহত হন।
থাইল্যান্ডের কর্তৃপক্ষের দাবি, ১৯৪৭ সালের মানচিত্র অনুযায়ী তিনটি মন্দিরই তাঁদের সুরিন প্রদেশে পড়েছে। এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে, কম্বোডিয়া দাবি করে আসছে, মন্দিরগুলো তাঁদের ওদার মিনশেই প্রদেশে অবস্থিত। ২০০৮ সালে থাইল্যান্ড অভিযোগ করে, কম্বোডিয়া ওই মন্দিরগুলোকে সেনাঘাঁটিতে পরিণত করছে।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, সামরিক কায়দায় সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি সম্ভব নয়। এ জন্য প্রতিবেশী দেশ দুটির আন্তরিকভাবে আলোচনায় বসা উচিত। মহাসচিব উভয় দেশকে সর্বোচ্চ ধৈর্যধারণ করে স্থায়ী ও কার্যকর অস্ত্রবিরতির লক্ষ্যে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। বান কি মুনের বরাত দিয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র মার্টিন নেসিরকি এ তথ্য দিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.