চুল্লিতে কোটি গুণ তেজস্ক্রিয়তা, সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কর্মীদের

জাপানে ক্ষতিগ্রস্ত ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ নম্বর চুল্লির ভেতরের পানিতে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় এক কোটি গুণ বেড়ে গেছে। গতকাল রোববার ওই চুল্লিতে কর্মরত সব কর্মীকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওই কেন্দ্রের পাশের সাগরের পানিতেও অস্বাভাবিক মাত্রার তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত করা হয়েছে।
কেন্দ্রের পরিচালনা প্রতিষ্ঠান টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি (টেপকো) জানায়, ২ নম্বর চুল্লির টারবাইন হাউসের পানিতে স্বাভাবিকের তুলনায় এক কোটি গুণ বেশি তেজস্ক্রিয়তা ধরা পড়ার পরপরই দ্রুত কর্মীদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। কর্মীরা ওই টারবাইন হাউসের পানি পাম্পের সাহায্যে নিষ্কাশনের কাজ করছিলেন।
টেপকোর এক মুখপাত্র বলেন, তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা এত বেড়ে যাওয়ার কারণ অনুন্ধান করে দেখা হচ্ছে। তবে তেজস্ক্রিয়তার কারণে এখন সেখানে কোনো কর্মী কাজ করতে পারছেন না।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ৩ নম্বর চুল্লির পানিতে ১০ হাজার গুণ বেশি তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত করা হয়। তখন ওই পানির মাধ্যমে তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হওয়ায় তিন কর্মীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
ফুকুশিমা উপকূলের সাগরের পানিতেও তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। গতকাল পানিতে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় এক হাজার ৮৫০ গুণ বেশি। আগের দিন শনিবার তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা ছিল এক হাজার ২৫০ গুণ।জাপানের পরমাণু ও শিল্প নিরাপত্তা সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিদেহিকো নিশিয়ামা বলেন, সামুদ্রিক স্রোতে তেজস্ক্রীয় পদার্থ বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়বে এবং তখন তেজস্ক্রিয়তার মাত্রাও কমে যাবে। কাজেই এতে সামুদ্রিক প্রাণী ও উদ্ভিদের ক্ষতি হবে না এবং সামুদ্রিক খবারও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে না বলে জানান তিনি।
এদিকে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক ইয়োকিয়া আমানো সতর্ক করে দিয়েছেন, জাপানের পারমাণবিক সংকট আরও কয়েক সপ্তাহ এমনকি কয়েক মাস প্রলম্বিত হতে পারে। নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনি বলেন, সব দিক বিবেচনায় এটি একটি মারাত্মক দুর্ঘটনা এবং শিগগির এর সুরাহা হচ্ছে না।
জাপানের সাবেক এই কূটনীতিক জানান, ওই চুল্লির পরমাণু কোর ও জ্বালানি রড ঠান্ডা রাখার জন্য পুরোপুরি পানিতে ঢেকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে কি না, কর্তৃপক্ষ সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নয়। এ ছাড়া কেন্দ্রে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার কাজেও কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন না।

No comments

Powered by Blogger.