হতাশায় মুহ্যমান প্রোটিয়া ক্রিকেট

দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে এসেছিল ‘চোকার্স’ অপবাদটা ঘোচাতে। দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখিয়ে, গ্রুপ পর্বে শীর্ষস্থান দখল করে উঠে এসেছিল কোয়ার্টার ফাইনালেও। অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন বিশ্বকাপটা এবার প্রোটিয়াদের ঘরেই যাবে। কিন্তু হলো না। কোয়ার্টার ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪৯ রানের হারে আবারো চূড়ান্ত হতাশা দিয়েই শেষ হলো দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ স্বপ্ন। যে নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ শুরুর কয়েকদিন আগে এই উপমহাদেশ থেকে ফিরে গিয়েছিল টানা ১১টি ম্যাচে হারের লজ্জা নিয়ে, তাদের কাছেই পরাজয় অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথকে একেবারে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। রীতিমতো বাকহীন হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এই ব্যর্থতার ধাক্কা সামলে উঠতেও অনেকদিন লেগে যাবে বলেই মনে করেন স্মিথ।
কোয়ার্টার ফাইনালে জয়ের লক্ষ্যটা খুব বেশি ছিল না। মাত্র ২২২ রান। চার উইকেটের বিনিময়ে স্কোর বোর্ডে ১২১ রান জমাও করে ফেলেছিলেন স্মিথ, ক্যালিস, ডি ভিলিয়ার্সরা। কিন্তু এরপর যেন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডার। মাত্র ৫১ রান সংগ্রহ করতেই ধরাশায়ী হলেন বাকি ৬ ব্যাটসম্যান। গ্রুপ পর্বে তাদের দুর্দান্ত পারফরমেন্সও প্রায় ম্লান হয়ে গেল এই ব্যাটিং বিপর্যয়ে। বিশ্বকাপ থেকে এই হতাশাজনক বিদায়ের পর গ্রায়েম স্মিথ বলেছেন, ‘আমরা কয়েকটি ম্যাচে খুব ভালো খেলেছিলাম। এখান থেকে আমাদের অনেক প্রাপ্তিও আছে। কিন্তু এখন দলের জন্য এই বিশ্বকাপের স্মৃতিটা খুব বেদনাদায়ক হয়েই থাকবে। আমাদের নিকট ভবিষ্যত্টাও খুব হতাশায় কাটবে। আমি জানি সবাই আবার একটা সময় খুব ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। কিন্তু আমরা কেউই বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে পারব না। এবারের বিশ্বকাপটা জেতার খুবই সুবর্ণ সুযোগ ছিল আমাদের সামনে। কিন্তু এভাবে ছিটকে যাওয়ার জন্য এখন শুধু নিজেদেরকে দোষারোপ করা ছাড়া, আর কিছুই করার নেই আমাদের।’
তবে ভবিষ্যত্টাকে হতাশাচ্ছন্ন হিসেবে আখ্যায়িত করলেও একেবারেই হাল ছেড়ে দিচ্ছেন না স্মিথ। ইমরান তাহির, স্টেইন, মরকেল, বোথা, পিটারসেনরা আবার দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটকে সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে যেতে পারবে বলেই আশা করছেন তিনি। বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের পুরোটাই যে ব্যর্থতা, এমন না। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট একটা নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে, যেখানে একসঙ্গে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে।’

No comments

Powered by Blogger.