খবর, কালের কণ্ঠের- কিশোরদের সাদামাটা ফলঃ জেএসসিতে পাসের হার ৭১.৩৪

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর রেকর্ড সৃষ্টিকারী ফল প্রকাশের দুদিনের মাথায় গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হলো জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফল। দেশের আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৭১.৩৪ শতাংশ। গড়ে প্রতি বিষয়েই কমপক্ষে ৮০ নম্বর করে পাওয়ার সুবাদে জিপিএ ৫ পেয়েছে আট হাজার ৫২ শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে প্রথমবারের মতো
অনুষ্ঠিত জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফল। এ পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮১.০৩ শতাংশ। জেডিসিতে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০৪ জন। সারা দেশের ৮৬৫টি প্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীই উত্তীর্ণ হতে পারেনি এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৬৭টি। জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ ৫ প্রাপ্তি-দুটোই সমসাময়িক অন্য পাবলিক পরীক্ষাগুলোর তুলনায় বেশ কম। সংশ্লিষ্ট কারো কারো মতে, প্রথমবার অনুষ্ঠিত কিশোর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার এ ফল আশাহত করেছে।
বিকেল ৩টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ সময় শিক্ষাসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নোমান উর রশীদ, আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর নুরসহ বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে শিক্ষামন্ত্রী ও বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যানরা গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের কপি হস্তান্তর করেন। দুপুরের পর থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভিড় বাড়তে থাকে। কোথাও কোথাও ৩টার আগেই ফল প্রকাশিত হতে থাকে। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়গুলোতে অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষার মতো চিরাচরিত হাসি-কান্নার চিত্রও ফুটে ওঠে। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক ও স্বজনরা উল্লাসে মেতে ওঠে।
ফল সংগ্রহে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পাশাপাশি অনেকে ঘরে বসেও তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে ওয়েবসাইট ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফল জেনে নিয়েছে। তবে একসঙ্গে অনেক লোক ওয়েবসাইটে সার্চ করায় কারো কারো ফল সংগ্রহে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, এ পরীক্ষার ফল প্রত্যাশিত হয়নি। কারণ হিসেবে তাঁদের বক্তব্য হলো, গত এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার যেমন বেশি ছিল তেমনি জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীও বেশি ছিল। এসএসসিতে পাসের হার ছিল ৭৮.১৯ শতাংশ এবং জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৬২ হাজার ১৩৪ শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায়ও পাসের হার বেশি, ৯২.৩৪ শতাংশ। তাই শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ মনে করছেন, অষ্টম শ্রেণীতে শিক্ষার্থীদের ফল তেমন ভালো হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে ফল খারাপ হলো কেন জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যেহেতু এটা প্রথমবার, সেই জন্য অন্য দু-একটি পরীক্ষা থেকে কম পাস করেছে। তা ছাড়া এসএসসিতে বাছাই করা শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়। আর এ পরীক্ষা সবার জন্য উন্মুক্ত। ফল বিপর্যয় হয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, 'ফল বিপর্যয়ের কোনো কারণ নেই। আগে তো ৩০ শতাংশও পাস করত। আর এটা প্রথমবার, তাই তুলনা করা যায় না। আগামীবার হলে তুলনা করা যাবে। তবে যেভাবেই নেন, ফল ভালোও বলতে পারেন, মন্দও বলতে পারেন।' ফলাফল নিয়ে শিগগিরই পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এবার জেএসসিতে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১২ লাখ ৩৪ হাজার ২৫৬ জন। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১১ লাখ ৫২ হাজার ৫৩৬ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে আট লাখ ২২ হাজার ২৭৫ শিক্ষার্থী। জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ছিল দুই লাখ ৪৪ হাজার ৬৩ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৭২ জন।
এ পরীক্ষায় পাসের হার সবচেয়ে বেশি বরিশাল বোর্ডে, গড় ৮১.৭৫ শতাংশ। এ বোর্ডে ৬৯ হাজার ৮৪৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৫৭ হাজার ১০২ শিক্ষার্থী। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪৭৮ শিক্ষার্থী।
পাসের হার সবচেয়ে কম সিলেট বোর্ডে, ৬১.৯৭ শতাংশ। এ বোর্ডে ৬৬ হাজার ৭২৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৪১ হাজার ৩৫১ শিক্ষার্থী। জিপিএ ৫ পেয়েছে ২০৩ জন।
ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮০.৫৮ শতাংশ। এখানে মোট তিন লাখ ৫৪ হাজার ৪৪২ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে দুই লাখ ৮৫ হাজার ৫৯৬ শিক্ষার্থী। এ বোর্ডে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা সর্বাধিক তিন হাজার ২১৮ জন।
রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৬৩ শতাংশ। এ বোর্ডে এক লাখ ৪৩ হাজার ৭০৩ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৯০ হাজার ৫৩৯ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে এক হাজার ৫০৮ জন।
কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৭৩.৫৬ শতাংশ। এখানে এক লাখ ৫০ হাজার ৬৮২ জন পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৮৪৭ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৬২৪ জন।
যশোর বোর্ডে এক লাখ ৪৪ হাজার ৪৯২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৯০ হাজার ২৩৫ জন। এ বোর্ডে পাসের হার ৬২.৪৫ শতাংশ। এ বোর্ডে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৪০ জন।
চট্টগ্রাম বোর্ডে এক লাখ এক হাজার ৫৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭১ হাজার চারজন। এ বোর্ডে পাসের হার ৭০.২৬ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫১৮ জন।
দিনাজপুর বোর্ডে এক লাখ ২১ হাজার ৫৮২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৫ হাজার ৬০১ জন। পাসের হার ৬২.১৮ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭৬৩ জন।
ঢাকা বোর্ডের অধীন বিদেশের সাতটি কেন্দ্রে মোট ৩২৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৩২০ জন। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে দুজন। এখানে পাসের হার ৯৮.১৬ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, নবম শ্রেণীতে ভর্তি হতে এ পরীক্ষার সনদ লাগবে। ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন জানান, এবার বোর্ডওয়ারি সেরা ২০ প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে। তিনটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে সেরা প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে। এগুলো মোট অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, মোট কৃতকার্য পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ ৫ প্রাপ্তির সংখ্যা।
গত ৪ নভেম্বর শুরু হয়েছিল আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০১০ সালের জেএসসি পরীক্ষা। সারা দেশের ১৮ হাজার ২০৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশ নেয়। একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে জেডিসি পরীক্ষা। তাতে অংশ নেয় ৯ হাজার ৮৫টি প্রতিষ্ঠান।
=========================
জিপিএ-৫ পেয়েছে আট হাজার ৫২ জন  এরশাদের বিচার হওয়া উচিত  ছোটদের বড় সাফল্য  প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষাঃ পাস ৯২%, প্রথম বিভাগ বেশি  বাংলাদেশের বন্ধুঃ জুলিয়ান ফ্রান্সিস  নিষ্ফল উদ্ধার অভিযানঃ দখলচক্রে ২৭ খাল  জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বনাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  ভ টিজিং : জরুরি ভিত্তিতে যা করণীয়  প্রতিশ্রুতির দিন  শোকের মাস, বিজয়ের মাস  চীনা প্রধানমন্ত্রীর পাক-ভারত সফর  দায়িত্বশীলদের দায়িত্বহীন মন্তব্য  নতুন প্রজন্ম ও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা  খিলক্ষেতে আগুনঃ কয়েলের গুদামে রাতে কাজ হতো ঝুঁকিপূর্ণভাবে  ভারতে বিহার রাজ্যের নির্বাচন  স্বপ্ন সত্যি হওয়ার পথে  আমাদের আকাশ থেকে নক্ষত্র কেড়ে নিয়েছিল যারা...  মুক্তির মন্দির সোপান তলে  আবেগ ছেড়ে বুদ্ধির পথই ধরতে হবে  বছর শেষে অর্থনৈতিক সমীক্ষা পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ  দুই কোরিয়ার একত্রিকরণ কি সম্ভব  গ্যাসের ওপর বিপজ্জনক বসবাস  উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তুলতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ  সময়ের দাবি জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি  জনসংখ্যা বনাম জনশক্তি  ব্যাংকের টাকা নয়ছয় হওয়া উচিত নয়  একটি পুরনো সম্পর্কের স্মৃতিচিত্র  পাটশিল্প ঘুরিয়ে দিতে পারে অর্থনীতির চাকা  ড. ইউনূসকে বিতর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে  সুশিক্ষার পথে এখনও বাধা অনেক  ব্যক্তির স্বাধীনতা হরণ ও মর্যাদাহানির পরিণাম কখনই শুভ হয় না ঘুষ ও লুটপাট উভয়ের বিরুদ্ধে একই সাথে লড়তে হবে  সুনীতি ও সুশাসন  আমি কেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের পক্ষে  শ্রমিক অসন্তোষ বর্তমান প্রেক্ষিত  জীবন ব্যাকরণঃ দর্জির মুক্তিযুদ্ধ  তথ্যের অধিকার ও জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ  শালীন ও সংযত কথাবার্তা কি শুধু একতরফা হতে হবে?  একটি অসমাপ্ত গল্প  মুসলিম বিশ্বে সেক্যুলারিজমের বর্তমান ও ভবিষ্যত  চীন দেশের কথা


দৈনিক কালের কন্ঠ এর সৌজন্যে

এই খবর'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.