ইন্দোনেশিয়ার কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা আবু বকর গ্রেপ্তার

সন্ত্রাসবাদের অভািযোগে ইন্দোনেশিয়ার কট্টরপন্থী ধর্মীয় নেতা আবু বকর বশিরকে গতকাল সোমবার গ্রেপ্তার করেছে সে দেশের পুলিশ। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আচেহ প্রদেশে একটি ইসলামিক জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
পশ্চিম জাভা থেকে আবু বকরকে গ্রেপ্তার করেছে সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশ। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। ইন্দোনেশিয়ার সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই পুলিশ তাঁকে এক সপ্তাহ আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।
তবে ইন্দোনেশিয়ার সন্ত্রাসবাদবিরোধী সংস্থার প্রধান আনসায়েদ এমবায় জানিয়েছেন, আবু বকরকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এমবায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আচেহ প্রদেশে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সঙ্গে আবু বকরের যোগাযোগ আছে। আমরা যতটা জানি, আচেহর সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে জেমাহ ইসলামিয়া এবং দেশের আরও অনেক সন্ত্রাসী সংগঠনের সম্পর্ক রয়েছে।’
এমবায় আরও বলেন, আবু বকরের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ হলো, তিনি আচেহর একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরের জন্য অর্থ সরবরাহ করেছেন।
জাকার্তা থেকে বিবিসির প্রতিনিধি কৃষ্ণা ভাসানি পুলিশের বরাত দিয়ে বলেন, জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপনের ক্ষেত্রে বাশার সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং ওই শিবিরের প্রধান প্রধান ব্যক্তিদের তিনি নিয়োগ দেন।
গ্রেপ্তারের পর আবু বকরকে জাকার্তায় পুলিশের সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে আবু বকর বলেন, এর পেছনে আমেরিকার হাত আছে।
আবু বকরের ছেলে আবদুল রহিম তাঁর বাবার প্রতি সুবিচারের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, তাঁর মাকেও আটক করা হয়েছে।
রহিম বলেন, ‘পুলিশের প্রতি আমাদের আহ্বান, তারা যেন আমার বাবার সঙ্গে অন্যায় আচরণ না করে। আমার বাবা নির্দোষ। তিনি শুধু মুসলিম হিসেবে তাঁর দায়িত্বগুলো পালন করছেন।’
২০০২ সালে বালিতে বোমা হামলার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে এর আগে দুই বছরের বেশি কারাভোগ করেছেন ৭১ বছর বয়সী বশির। ২০০৬ সালে তিনি মুক্তি পান। বালি হামলায় নিহত হয়েছিল ২০২ জন।
আবু বকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠন জেমাহ ইসলামিয়ার অন্যতম পরামর্শদাতা। তবে বশির এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
এ ছাড়া বশির কট্টরপন্থী ইসলামি সংগঠন জেমাহ আনসারুত তওহিদের (জেএটি) নেতৃত্বে আছেন বলে ধারণা করা হয়। গত মে মাসে পুলিশ জাকার্তায় এই সংগঠনের সদর দপ্তরে অভিযান চালিয়ে বশিরের তিন অনুসারীকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে আচেহতে জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনা হয়।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৭ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে হামলার পরিকল্পনা করেছিল জেএটি। ওই অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট যোগ দেবেন।

No comments

Powered by Blogger.