রাশিয়ায় দাবানলে হুমকির মুখে পরমাণু স্থাপনা

রাশিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে হুমকির মুখে পড়েছে দেশটির একটি অন্যতম পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র। এদিকে দাবানলের ধোঁয়ার কারণে মস্কোতে আটকা পড়েছে কয়েক হাজার বিদেশি।
রাশিয়ার জরুরি অবস্থাবিষয়ক মন্ত্রী সের্গেই সইগু গত রোববার দমকলকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আগুন নেভানোর জন্য তাঁদের কর্মকাণ্ড দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিতে। দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে গত রোববার বৈঠকের সময় তিনি বলেন, ‘স্নেজহিনস্ক এলাকায় আগুন নেভাতে আপনারা রাতভর কাজ করবেন।’
স্নেজহিনস্ক মস্কো থেকে দেড় হাজার কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রটি এখানে।
মন্ত্রী সইগু বলেন, ‘পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র থেকে আগুন আর মাত্র সাত হেক্টর দূরে আছে। এটা খুবই বিপদের। আমি আশা করছি আপনারা আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হবেন।’
সারোভ ও নিঝনি নভগরোদ এলাকায় রাশিয়ার আরও দুটি পরমাণু কেন্দ্র দাবানলের কারণে হুমকির মুখে আছে। তবে মন্ত্রী সইগু গত রোববার জানিয়েছেন, ওইসব এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ এর আগে বারবার বলে এসেছে দাবানলের কারণে পরমাণু স্থাপনাগুলোর জন্য কোনো হুমকি সৃষ্টি হয়নি। তবে অবশেষে তারা স্বীকার করল ওইসব স্থাপনা থেকে সব পরমাণু ও বিস্ফোরক দ্রব্য সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে এই দাবানলের কারণে এ পর্যন্ত ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে দাবানলের প্রচণ্ড ধোঁয়ায় মস্কোতে আটকা পড়েছে কয়েক হাজার বিমানযাত্রী। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, মস্কোর দমোদেদোভো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকা পড়েছে প্রায় দুই হাজার যাত্রী। তাদের ফ্লাইট বিলম্বিত হচ্ছে। যাত্রীরা বিমানবন্দরের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। সেখানে খাবার ও পানীয় কমে আসছে।
দাবানলের ঝাঁঝালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে মস্কো। বড় বড় ভবনগুলোও ভালোভাবে দেখা যায় না। সেন্ট পিটার্সবাগ এবং প্রতিবেশী ফিনল্যান্ডেও ধোঁয়া পৌঁছে গেছে।
এদিকে দাবানলের কারণে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় মস্কোতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রতিদিনের মৃত্যুর হার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। শহরের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আন্দ্রেই সেলসোভস্কি গতকাল সোমবার এ কথা জানিয়েছেন।
সেলসোভস্কি বলেন, ‘স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ৩৬০ থেকে ৩৮০ জনের মৃত্যু হয়। এখন প্রতিদিন গড়ে ৭০০ জনের মতো মারা যাচ্ছে।’

No comments

Powered by Blogger.