মাঠের মুখ

একটু আগেও ছিলেন উত্ফুল্ল, দুই হাতের তালি থামছিলই না। এখন তাঁর দৃষ্টি মাঠে নয়, ডান দিকে। উদ্বিগ্ন চোখে তাকিয়ে বড় পর্দার দিকে। মোহাম্মদ আশরাফুলের ‘জীবন’ তখন টিভি আম্পায়ারের হাতে। টেনশনেই হোক কিংবা আরও একটু ভালো করে দেখার জন্য, রোদচশমাটা চোখ থেকে খুলে রাখলেন কপালের ওপর। পর্দায় ভেসে উঠল ‘আউট।’ হতাশ ভঙ্গিতে ঘুরে তাকিয়ে বললেন, ‘আরে, একটু ভালো করে দৌড়ালে কী হয়!’
আশরাফুল তো চেষ্টা করেছেনই, তাই না? ‘তা তো করেছেনই, ইচ্ছা করে তো আর আউট হননি। দর্শকেরা তো হতাশা থেকে এমন একটু-আধটু বলেই’—একটু যেন লজ্জিত হয়ে বললেন ইশরাত মালিহা। পরের কথাতেই পরিষ্কার, আশরাফুলের ভক্ত বলেই বলেছেন অমন কথা, ‘আশরাফুল আমার সবচেয়ে প্রিয় ক্রিকেটার। ও ভালো খেললে বাংলাদেশ জেতে। বড় দলের সঙ্গে ওর যতগুলো ভালো ইনিংস আছে, বাংলাদেশে আর কার আছে?’
এই আশরাফুল-ভক্ত পেশায় চিকিত্সক, কাজ করেন হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। এক দিনের জন্য মানবসেবা থেকে ছুটি নিয়ে ভাইবোনকে নিয়ে চলে এসেছেন খেলা দেখতে। ঢাকার মাঠে ক্রিকেট হচ্ছে, না এসে কি পারা যায়! একটা সময় ক্রিকেট দেখতে নিয়মিতই আসতেন মাঠে। ইনডিপেনডেন্স কাপ, বিশ্ব একাদশ বনাম এশিয়া একাদশ থেকে শুরু করে অনেক ম্যাচ দেখছেন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। তবে পেশাগত জীবনে ঢুকে যাওয়ায় এখন আর আগের মতো মাঠে আসার সময় হয় না। মিরপুর স্টেডিয়ামে এসেছেন এই প্রথম।
যতক্ষণ খেলা চলছে, এক মুহূর্ত মাঠ থেকে চোখ সরাচ্ছেন না। হঠাত্ করে আবারও হতাশা, আউট ইমরুল কায়েস। কয়েক সেকেন্ড চুপ থাকার পরই আবার তালি দিয়ে উঠলেন, ‘আরে সাকিব নামতেছে। ক্যাপ্টেনের ব্যাটিং দেখব...।’

No comments

Powered by Blogger.