ফি বণ্টন নীতিমালা

আধুনিক চিকিত্সাবিজ্ঞানে রোগ নির্ণয়ের পূর্বশর্ত হচ্ছে সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। এ ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা পালন করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা। তাঁরা প্রতিনিয়ত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন রেডিয়েশনের মধ্যে থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এনজিওগ্রাম, ক্যানসার চিকিত্সায় রেডিওথেরাপি দেন।
১৯৮৪ সাল থেকে সরকারি হাসপাতালের নিজ নিজ বিভাগ থেকে আদায় করা ইউজার ফির ৫০ ভাগ সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিত্সক ও কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টন হয়ে আসছে। এর মধ্যে মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা হাসপাতালভেদে ১৪-১৬ ভাগ পেয়ে থাকেন।
সরকার সম্প্রতি ইউজার ফির হার পুনর্নির্ধারণ করে তা হাসপাতালের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে বণ্টন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিভাজনের হার নির্ধারিত হবে। প্রস্তাবিত খসড়া হার বণ্টন নীতিমালায় উপজেলা হাসপাতালে আদায় করা ইউজার ফির ১৫ ভাগ মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা সমভাবে পাবেন বলে উল্লেখ করা হলেও জেলা সদর হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালগুলোয় মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের জন্য আলাদা কোনো বণ্টন হার না রেখে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের সমভাবে ১৫ ভাগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অন্যদিকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনে অবস্থিত বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোয় বণ্টনের কোনো হার উল্লেখ করা হয়নি। প্রস্তাবিত খসড়া বণ্টন হার নীতিমালায় মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের জন্য আলাদা বণ্টন হার না থাকায় তাঁদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। চিকিত্সাসেবা ও রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ভূমিকা ও কাজের ধরন কর্মচারীদের থেকে ভিন্নতর। ইউজার ফি বণ্টনের হারের ক্ষেত্রে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের সঙ্গে একত্রীভূত করার প্রস্তাব অযৌক্তিক ও বাস্তবতাবর্জিত।
এ অবস্থায় ইউজার ফি বণ্টন হারের নীতিমালায় নিজ নিজ বিভাগ থেকে আদায় করা ফির ১৫ ভাগ সংশ্লিষ্ট বিভাগে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের মধ্যে বণ্টনের ব্যবস্থা রেখে ওই বণ্টনের নীতিমালা তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
সেলিম মোল্লা
মহাসচিব, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা হেলথ টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা।

No comments

Powered by Blogger.