ধোনির সেঞ্চুরিতে সিরিজে সমতা

ভারতের ইনিংস কাল দুটো ‘প্রথম’ দেখল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মহেন্দ্র সিং ধোনির প্রথম সেঞ্চুরি। আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের প্রথম ৩৫০ ছাড়ানো ইনিংস। এই দুই ‘প্রথম’ মিলে ৯৯ রানের বড় জয় দিয়ে সিরিজে ফিরে এল ভারত। সাত ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ এখন ১-১।
নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে এই প্রথম ওয়ানডে খেলেছে ভারত-অস্ট্রেলিয়া। ২০০৬ সালে এই মাঠে একটা টেস্ট হয়েছিল, ভারত জিতেছিল ১৭২ রানের বড় ব্যবধানে। কাল ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে ৩৫৪ রান তুলে ফেলার পরই ম্যাচটা হেলে যায় ভারতের দিকে। এর আগে ২৯১৪টি ওয়ানডেতে ৩৫০-এর বেশি রান তুলে হেরে যাওয়ার নজির যে মাত্র একটাই।
তার পরও অস্ট্রেলিয়া বলে কথা! সামনে যতই রানের পাহাড় থাকুক, হারের আগে কি এই দল হার মানে? কিন্তু কাল যেন অন্য অস্ট্রেলিয়া। ৪৮.৩ ওভারে ২৫৫ রানে অলআউট রিকি পন্টিংয়ের দল।
কুয়াশার কথা ভেবে ব্যাটিং উইকেটে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন পন্টিং। কিন্তু সিদ্ধান্তটা যে ভুল ছিল, ভারত ৩৫৪ করার পর একদফা সেটা প্রমাণও হয়েছে। ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ধুকতে শুরু করা অস্ট্রেলিয়া পরে সেটি আরও ভালো করে বুঝেছে। মাইক হাসি লড়ছিলেন, কিন্তু ব্যক্তিগত ৫৩ রানে তিনি বিদায় নিলে (১৪০/৫) অস্ট্রেলিয়ার সামনে পরাজয়টা সময়ের ব্যাপার হয়ে যায়।
ম্যাচের প্রথম ভাগটা দর্শকদের জন্য উপভোগ্য করে তুলেছিলেন ধোনি। ১০৭ বলে ১২৪ রান, যাতে ছিল ৯টি চার ও ৩টি ছক্কা। শেন ওয়াটসনকে লং অফের ওপর দিয়ে মারা ছক্কাটা ধোনিকে পৌঁছে দিয়েছে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরিতে। পরে ম্যাচ-সেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে সেঞ্চুরির আনন্দটা আরও বেশি উপভোগ করছিলেন ভারতের অধিনায়ক।
ভারতের ইনিংসটা অবশ্য ‘ওয়ানম্যান শো’ ছিল না। গৌতম গম্ভীরের ৭৬ আর সুরেশ রায়নার ৫০ বলে ৬২ রানের ইনিংসটার যথেষ্ট অবদান আছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজেদের নতুন রেকর্ড গড়ায়।
বীরেন্দর শেবাগের স্বভাবসুলভ ৪০ রানের ইনিংসে ৩০-ই এসেছে চার-ছক্কা থেকে। দলীয় ২১ রানে শচীন টেন্ডুলকারের উইকেটটি হারানোর ধাক্কা ভুলিয়ে দিয়েছেন তিনিই। তবে ৩০ রানের ভেতর শেবাগ আর যুবরাজ সিংকে তুলে নিয়ে ভারতের স্কোরটাকে ৯৭/৩ বানিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। যদিও তাদের দুর্ভোগের শুরু এর পর থেকে, এর পরই পর পর দুটো শতরানের জুটি।
প্রথমটা চতুর্থ উইকেটে গম্ভীরের সঙ্গে ধোনির ১১৯ রানের। ওভারপ্রতি ৬.৩১ রান করে তোলা এই জুটি ভারতকে ৩০০ ছাড়ানো স্কোরের ভিত্তি এনে দিয়েছে। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ধোনি-রায়নার ১৩৬। এর মধ্যে আছে ব্যাটিং পাওয়ার প্লের ৫ ওভারে তোলা ৪৭। আছে জনসনের এক ওভার থেকে তোলা ১৮ রানও। এই ঝোড়োগতির কারণেই ৪৯ ওভার শেষে ভারতের সম্ভাব্য ইনিংসটাকে ৩৬০-এর মতোই দেখাচ্ছিল।
সেটি হয়নি জনসনেরই করা ইনিংসে শেষ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারত মাত্র ৫ রান তোলায়। কিন্তু যা হয়েছে, সেটাই যথেষ্ট। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯৯ রানের বিশাল জয়—ম্যাচের আগে কি ভাবতে পেরেছিল ভারত!

No comments

Powered by Blogger.