উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপে চলে গেল আর্জেন্টিনা

প্লে-অফের ঝক্কি আর পোহাতে হলো না আর্জেন্টিনাকে। কোচ হিসেবেও নিজের খেলোয়াড়ি সুনাম অক্ষুণ্ন রাখলেন আর্জেন্টিনাকে অধিনায়ক হিসেবে ’৮৬-এর বিশ্বকাপ জেতানো ডিয়েগো ম্যারাডোনা। আগামী বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে নিজেদের জায়গা নিয়ে আর্জেন্টিনার যে অনিশ্চয়তা ছিল তা একেবারেই কেটে গেল আজ উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে। এ জয়ের অর্থ আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের চতুর্থ দল হিসেবে সরাসরি দক্ষিণ আফ্রিকার টিকেট হাতে নিল।
উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়ে সংশয়ে ছিল আর্জেন্টাইন সমর্থকেরা। গোল করতে না পারার ব্যর্থতা, আর কয়েকজন তারকাকে মাঠের পারফরম্যান্সে চিনতে না পারায় উরুগুয়ের বিপক্ষে জিতবই—এমন কথা জোর দিয়ে বলতে পারছিলেন না অনেক কট্টর আর্জেন্টাইন সমর্থকেরাও। কিন্তু সব সংশয় আর অনিশ্চয়তাকে পেছনে ফেলে ফুটবলের মুকুটহীন রাজপুত্র ম্যারাডোনা কোচ হিসেবে খাদের কিনারা থেকে আর্জেন্টিনাকে নিয়ে গেলেন বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে।
আজ বৃহস্পতিবার উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে আর্জেন্টিনার পক্ষে জয়সূচক গোলটি করেন ম্যারাডোনার আরেক ‘সুপারসাব’ মারিও বোলাত্তি। আর্জেন্টিনার পক্ষে মাত্র তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে বোলাত্তি গোল করে আর্জেন্টিনাকে নিয়ে গেলেন বিশ্বকাপে। আজ ম্যারাডোনা নিশ্চয়ই বোলাত্তিকে আবেগময় অভিনন্দনে ভাসাচ্ছেন। খেলা শেষ হওয়ার মাত্র ছয় মিনিট বাকি থাকতে হুয়ান সেবাস্টিয়ান ভেরনের ফ্রি-কিক উরুগুয়ের রক্ষণভাগ ঠিকমতো ফেরাতে ব্যর্থ হলে সুযোগ পেয়ে উরুগুয়ের জালে বল জড়িয়ে দেন বোলাত্তি।
কোচ হওয়ার পর থেকে দল পরিচালনা ও খেলোয়াড় বাছাই নিয়ে যে রকম সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন ’৭০ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের বাধা ডিঙাতে ব্যর্থ হলে আর্জেন্টিনা ফুটবলের দৃশ্যপট থেকেই হয়তো বিদায় নিতে হতো ডিয়েগো ম্যারাডোনার। কিন্তু পেরুকে মার্টিন পালের্মোর গোলে যখন শেষ মুহূর্তে আর্জেন্টিনা হারালো, তখনই মানসিকভাবে বিশ্বকাপের পথে অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। আজ কেবল উরুগুয়ের সঙ্গে না-হারার লড়াইয়ে জয় নিয়েই উতরে গেল তারা। সেই সঙ্গে রক্ষা হলো ডিয়েগো ম্যারাডোনার সম্মান আর নিশ্চিত হলো আর্জেন্টিনার দক্ষিণ আফ্রিকার টিকেট।
আজ রাতে হয়তো অনেক দিন পর ডিয়েগো ম্যারাডোনা নিশ্চিন্তে ঘুমোবেন।

No comments

Powered by Blogger.