ট্রাম্পকে নিয়ে উদ্বিগ্ন ডেমোক্রেট নেতারা

দুই সপ্তাহেরও কম সময় পর যুক্তরাষ্ট্র পেতে যাচ্ছে তাদের নতুন প্রেসিডেন্ট। এবারের নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উভয় প্রার্থীই খুব ভালো অবস্থানে রয়েছে। তাই কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন তার আগাম পূর্বাভাস দেয়া কঠিন। ধারণা করা হচ্ছে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হতে যাচ্ছে এবছর। এখন শুধুই অপেক্ষা কে হচ্ছেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।  ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী কমালা হ্যারিস নাকি রিপাবলিকান নেতা ডনাল্ড ট্রাম্প। দুজনের জনপ্রিয়তাই এখন তুঙ্গে।

বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে  ডেমোক্রেট দলের মনোনয়ন পাওয়ার দুই মাস অতিক্রম করেছে কমালা হ্যারিস। শিকাগোতে একটি আনন্দময় জাতীয় কনভেনশনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতা করার জন্য কমালাকে দলীয় মনোনয়নের মুকুট দিয়েছিল ডেমোক্রেটরা।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ৮১ বছরের নড়বড়ে জো বাইডেন যেন মানানসই হচ্ছিল না। সে বিষয়টি অবশ্য প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কেই স্পষ্ট হয়ে যায়। ওই বিতর্কে নড়বড়ে পারফরমেন্সের জন্য খোদ দলের ভেতরেই বাইডেনের প্রার্থিতা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। প্রথমে গোঁ-ধরলেও এক পর্যায়ে বাইডেন নিজেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা থেকে সরিয়ে নেন। এরপরই দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস ওই পদের হাল ধরেন। কিন্তু ট্রাম্পকে নিয়ে ডেমোক্রেটদের উদ্বেগ যেন এখনো কাটেনি।

কেননা, ডেমোক্রেট দলের জয় নিয়ে অতিরিক্ত যে আত্মবিশ্বাস প্রচার করা হচ্ছে তা নিয়ে বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। তারা বলছেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে উদ্বেগ ততই বাড়ছে। তাদের কথা শুনে মনে হচ্ছে তাদের উদ্বেগ এখন আরও প্রকট হচ্ছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, বাইডেনের তুলনায় কমালা হ্যারিস নিজের দলকে বেশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত সামান্য হলেও ট্রাম্পকে পেছনে রেখেছেন কমালা। এটা নিশ্চিত যে, ডেমোক্রেট দলের নির্দিষ্ট যে ভোটার রয়েছেন তারা কমালাকেই ভোট দেবেন। কিন্তু এর বাইরে যে ভোটার রয়েছেন তাদের নিজ শিবিরে ভেড়ানোই কমালার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জের বিষয় এখন।  
এই উদ্বেগ কাটাতে কমালার দিকেই এখন নজর রাখছেন দলের সিনিয়র নেতারা। তারা মনে করেন, বিজয়ের জন্য হ্যারিসকে ডেমোক্রেট শিবিরের বাইরের ভোটারদের আকৃষ্ট করতে হবে, পাশাপাশি ভঙ্গুর জোটকে ধরে রাখতে হবে যা বাইডেনকে ২০২০ সালে জিততে সাহায্য করেছিল।

সাম্প্রতিক ভোটগুলোতে যে চিত্র ফুটে উঠেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, কমালা ও ট্রাম্প প্রায় সমান্তরাল গতিতেই চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তবে যেসব রাজ্যে নিজেদের আধিপত্য রয়েছে সেখানে ট্রাম্পের জায়গা পাওয়া  ডেমোক্রেটদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মিশিগান, উইসকনসিন এবং পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্পকে নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ডেমোক্রেটদের সিনিয়র নেতারা। যদিও ডেমোক্রেটদের মূল স্টেটগুলোতে প্রতিযোগিতাটি বেশ হাড্ডাহাড্ডি হতে পারে।

যদিও কমালার দাবি তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী কয়েকদিন যাবৎ বেশ অনুজ্জ্বল পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্পকে নিয়ে বেশ হাসাহাসি করছেন তিনি। কমালা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টকে একজন ‘প্রতারক বা অবিশ্বাসী’ মানুষ বলে অভিহিত করেছেন। সম্প্রতি এক বক্তৃতায় ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে তীর্যক মন্তব্যও করেছেন ডেমোক্রেট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। এই হাসাহাসি ডেমোক্রেটদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায় কিনা তা নিয়েও রয়েছে জল্পনা-কল্পনা। জরিপ বলছে এখনো কমালা হ্যারিসের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে; তবে তা যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। কেননা ইলেক্টোরাল কলেজে জিততে তাকে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোতে জয় নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে ডেমোক্রেট দলের যেসব রাজ্যে অবস্থান শক্তিশালী সেখানে কোনোভাবেই তাকে হেরে গেলে চলবে না।

mzamin


No comments

Powered by Blogger.