সিলেট সেটেলমেন্ট: বসে বসে বেতন নিচ্ছেন অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারী by ওয়েছ খছরু
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব অফিসে না গিয়ে বাড়িতে বসে থাকছেন। শুধুমাত্র তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার জন্য বার বার ধরনা দিলেও অনেক অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীর দেখা মিলছে না। অনেকেই আবার বাড়িতে বসে সিল ব্যবহার করে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। কর্মচারীরা জানিয়েছেন, জরিপ কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে ২য় শ্রেণির কর্মকর্তা ১৫ জন, ৩য় শ্রেণির কর্মচারী ৩৯ জন ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী ৫২ জন কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যেই অর্ধেকের বেশি হচ্ছেন পুরাতন কর্মকর্তা-কর্মচারী। আর অর্ধেক হচ্ছেন বিভিন্ন সময় নিয়োগপ্রাপ্ত কিংবা বদলি হয়ে আসা কর্মকর্তা-কর্মচারী। এদিকে- ২০২৩ সালের ১লা নভেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা উল্লেখ করে পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) মো. মোমিনুর রশীদ স্বাক্ষরিত আদেশে সিলেট জোনে কর্মহীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামের তালিকা প্রেরণ করার জন্য জোনাল অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করেন। ক্রাশ প্রোগ্রামের আওতায় দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, খুলনা ও বরিশাল জোনে জনবল স্বল্পতার কারণে অনেক কাজ এগিয়ে নেয়া যাচ্ছে না। সে কারণে কর্মহীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি করতে এই তালিকা চাওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। চিঠি প্রাপ্তির পর সিলেট জোনাল সেটেলমেন্ট কার্যালয় থেকে ৩৯ উপজেলা অফিসে উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার, সার্ভেয়ার, সিটকিপার, কম্পিউটার, পেশকার, রেকর্ডকিপার, খারিজ সহকারী, কপিস্ট-কাম-বেঞ্চ সহকারী, যাচ মোহরার, প্রসেস সার্ভার, অফিস সহায়ক ও চেইনম্যান পদে সর্বমোট ১০৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা পাঠানো হয়।
তালিকা মোতাবেক অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ২৪ জনকে বিভিন্ন জোনে বদলি ও পদায়ন করেন। তবে ৩য় শ্রেণির ১৪ জন দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর বদলির আদেশ পুনরায় বাতিল করা হয়েছে। বদলির বাতিল কিংবা তালিকা থেকে বাদ পড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া-১০ জনের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারী বদলি হওয়া কর্মস্থলে না গিয়ে নিজ নিজ এলাকায় বদলি হয়ে চলে গেছেন। ওই সময় সেটেলমেন্টের আব্দুল মান্নান ও সাধন চাকমাকেও বদলি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তারা তাদের বদলি ঠেকিয়ে নিজ কর্মস্থলেই থেকে যান। অভিযোগ রয়েছে, বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ‘ম্যানেজ’ করে মাসের পর মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেছেন। আবার মাস শেষে ঠিকই বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। বিষয়টি অধিদপ্তরের কর্তা ব্যক্তিদের দৃষ্টিগোচর হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মধ্যে অধিদপ্তর থেকে বদলির গুজব ছড়িয়ে তাদের মধ্যে ‘বদলি আতঙ্ক’ সৃষ্টি করা হয়। একপর্যায়ে বদলি ঠেকানো কিংবা বদলি বাতিলের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সিলেটের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার এমরান হোসেন মানবজমিনকে জানিয়েছেন, সিলেট সেটেলমেন্ট থেকে অর্ধেকের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। তারা বদলিকৃত জোনে কাজও করছেন। কিছুসংখ্যক রয়েছেন যাদের অবসরের সময় চলে এসেছে। এ কারণে তাদের বদলি করা হয়নি। আগামী বছর অনেকেই অবসরে চলে যাবেন। এ কারণে তাদের এখানে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
No comments