ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির আঘাতে লন্ডভন্ড ভিয়েতনাম, ১৭৯ জনের মৃত্যু

ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির আঘাতে ভিয়েতনামে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ভয়াল এই ঘূর্ণিঝড়ে  রাজধানী হ্যানয়সহ দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১৭৯ জন। এছাড়া প্রবল বর্ষণে রেড রিভার নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে হ্যানয়ের অধিকাংশ এলাকা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়,  দক্ষিণ চীন সাগরের একটি নিম্নচাপ থেকে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড় ইয়াগি ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে আঘাত হানে। এর আগে ফিলিপাইনের লুজন প্রদেশ এবং চীনের কোটু দ্বীপেও আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড়টি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আবহাওয়া সংস্থার কর্মকর্তাদের মতে, এ বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত এশিয়ায় যত ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে, সেসবের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল এটি। শনিবার সকালে উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে আঘাত হানার পর রাজধানী হ্যানয়ের দিকে এগোতে শুরু করে ইয়াগি। যেসব এলাকা অতিক্রম করেছে এই ঝড়, সেসব এলাকায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ২৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠেছিল বলে জানিয়েছেন ভিয়েতনামের আবহাওয়া দপ্তর। সোমবার থেকে শক্তি হারাতে শুরু করে ঘূর্ণিঝড়টি। তবে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকে।

ব্যাপক বর্ষণের জেরে হ্যানয়ের পাশদিয়ে বয়ে যাওয়া রেড রিভারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার পানি রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পরিচালক মাই ভ্যান কিয়েম বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, রেড রিভার নদীর পানি গত ২০ বছরের রেকর্ড অতিক্রম করেছে। এছাড়া অন্যান্য নদীতেও পানি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীতে পানির প্রবাহ রেকর্ড পরিমাণে বেড়ে যাওয়ায় বন্যা এবং ভূমিধস শুরু হয়েছে রাজধানী হ্যানয়সহ বিভিন্ন প্রদেশে। দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল ও সরকারি ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন। বন্যার কারণে অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। হ্যানয়ের বাসিন্দা এনগুয়েন ডাক ত্যাম একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। তার বাড়ি রেড রিভার নদীর কাছাকাছি তার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে থাকতেন তিনি। রয়টার্সকে তিনি বলেন, আমি দোতলায় থাকতাম। বন্যার পানি তিন তলা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। আমার বাসা পুরোপুরি পানির নিচে। সঙ্গে করে কিছুই আনতে পারি নি। আরেক ভুক্তভোগী এনগুয়েন ভ্যান হাং জানান, তার বাড়ি ছিল রেড রিভার নদীর তীরে এবং বন্যা ও ভূমিধসের কারণে তার বাড়ির আর কোনো চিহ্ন এখন আর নেই। তিনি বলেন, আমার বাড়ি এখন নদীর অংশ।
mzamin

No comments

Powered by Blogger.