ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন: পদ্মার ইলিশ কলকাতায় হতাশা
এতে আরও বলা হয়, পানিবণ্টন নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে রেখেছিল বাংলাদেশ। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসবের সময় যথারীতি ব্যতিক্রম ছিল। কূটনীতিতেও একটি প্রয়োজনীয় মাধ্যম ইলিশ। ২০২২ সালে ভারত সফর করেন বাংলাদেশের তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেসময় তার সফরের প্রথম দিনেই ইলিশ নিয়ে আলোচনা হয়। এর কয়েকদিনের মধ্যেই কার্গোভর্তি ইলিশ হাজির হয় ভারতে। কিন্তু ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। এরপর দুই দেশের সম্পর্ক পতন হতে হতে একেবারে ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালানোর পর তাকে আশ্রয় দিতে স্বেচ্ছায় রাজি হয় ভারত এবং একই সঙ্গে তারা শেখ হাসিনার প্রতি অটল সমর্থন প্রকাশ করে। এতে বহু বাংলাদেশি হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন। গত মাসে উজানে একটি ড্যাম ছেড়ে দিয়ে ভারত বন্যা সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশে- অনেকে এমন অভিযোগও করেন। তবে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বিলিয়নিয়ার গৌতম আদানি নেতৃত্বাধীন আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়ার বকেয়া ৫০ কোটি ডলার চাইছে। এই যে ‘বিনিময়’-এর মূল্য দিতে হবে ভারতীয় ক্ষুধার্ত বাঙালিকে। ৩রা সেপ্টেম্বর মৎস্য ও পশুসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা নিশ্চিত করবো- এবার দুর্গাপূজায় ভারতে যেন ইলিশ রপ্তানি করা না হয়। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় ভারতীয় প্রতি কেজি ইলিশের বাজারমূল্য এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে ২৫০০ রুপি। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যা শতকরা ৩৫ ভাগ বেশি। বাংলাদেশি ইলিশের সরবরাহ না হলে এই মূল্য উৎসবের সময় আরও বেড়ে যেতে পারে। অভ্যন্তরীণভাবে অন্য স্থানগুলোতেও ইলিশ পাওয়া যায়। যেমন, কলকাতার প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে থাকা গুজরাট হলো আরেকটি উৎস। কিন্তু আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন বাঙালিরা তা খেতে চাইবেন না- এমনটা বলে নাক সিঁটকালেন কলকাতার এক বাসিন্দা। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের এই নিষেধাজ্ঞা পাল্লা দিতে পারে।
No comments