সাবেক মন্ত্রী-হুইপসহ আট এমপির নামে মামলা
দিনাজপুর : দিনাজপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সদ্য সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ ২৪ জনের নাম দিয়ে ও ৭৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বোচাগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন— সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আফসার আলী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কাউসার, পিএ মো. আব্দুল বাশার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আব্দুস সবুর, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইশান ইসলাম, কলেজপাড়ার মো. শাহ জাহান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. বাপ্পী সরকার, শহিদপাড়ার মো. সিমন ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা মো. নাসিরুল ইসলাম নয়ন, শহিদপাড়া মো. নিলয় ইসলাম, মো. মেহেদী হোসেন, হাজিপাড়া মো. রিয়াদ হোসেন, আটগাঁও পশ্চিমপাড়ার মো. নাঈম ইসলাম, সাবেক ছাত্রলীগ মো. শাহ নেওয়াজ সৌরভ, শহিদপাড়ার মো. আশরাফুল ইসলাম আকাশ, মো. ছুটি সেতাবগঞ্জ কলেজ শাখার ছাত্রলীগ সভাপতি মো. শাওন ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা মো. হৃত্তিক হোসেন, মো. সমুদ্র ইসলাম, বড় মাঠ পাড়ার মো. সোহেল রানা, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ আলী তুহিন, রেলকলোনিপাড়ার, মো. আরাফাত হোসেন জনি ও বোচাগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন।
বোচাগঞ্জ থানার ওসি মো. আবু বক্কর সিদ্দিক রাসেল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেনকে বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার রায় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ঠাকুরগাঁওয়ের হাজীপাড়া এলাকার রিপন ওরফে বাবু। রমেশ চন্দ্র সেন আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে সাদা পোশাকে পুলিশ রমেশ চন্দ্র সেনকে আটক করে। তিনি অসুস্থ থাকায় রিমান্ড চাওয়া হয়নি। পরে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
রমেশ চন্দ্র সেনের স্ত্রী অঞ্জলি সেন বলেন, সাদা পোশাকে পুলিশের ১০-১৫ জনের একটি দল তাকে তুলে নিয়ে যায়। তারা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্য হতে পারেন। তাদের সবার কাছে অস্ত্র ছিল। রমেশকে তারা বলেন— ওঠেন, চলেন। তারা হাত ধরে জোর করে টেনে নিয়ে চলে যায়। কোথায় নিয়ে যাবেন, বারবার জিজ্ঞেস করেছি কিন্তু তারা কিছু বলেনি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন বলেন, ঠাকুরগাঁও সদর থানায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা একটি মামলায় রমেশ চন্দ্র সেনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজার : আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক হুইপ, কক্সবাজার সদর-রামু-ঈদগাঁও আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুল হক মার্শালসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ১৫০ জনকে। শনিবার (১৭ আগস্ট) মডেল থানা পুলিশের এসআই সেলিম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় অন্য আসামিরা হলো কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান, কাউন্সিলর সালাহ উদ্দিন সেতু, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ জয়, জুয়েল আহমেদ, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মঈন উদ্দিন এবং খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান ছিদ্দিকী। কক্সবাজার মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মিছিলে গুলি চালায় আসামিরা। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয়ে এক যুবক নিহত হন। নিহত যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করা না গেলেও সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত শেষ করে শনিবার পুলিশের পক্ষ থেকে মামলাটি করা হয়।
কক্সবাজার মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, শনিবার মামলাটি এফআইআরভুক্ত হয়েছে। মামলায় এজাহারভুক্ত নামীয় আসামি ১২ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আসামি ১৫০ জন। ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে আসামিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
নাটোর : নাটোর সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলকে প্রধান আসামি করে সদর থানায় দুটি হত্যাচেষ্টার এজাহার দায়ের করা হয়েছে। শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে প্রথম এজাহার দায়ের করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন। এজাহারে শিমুলসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়।
দ্বিতীয় মামলাটিতেও শিমুলকে প্রধান করে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনের নামে হত্যাচেষ্টার এজাহার দাখিল করেন সাইফুল ইসলাম আফতাব।
প্রথম এজাহারে ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন উল্লেখ করেন, চলতি বছরের ১৩ মার্চ দুপুরে আদালতে একটি মামলার হাজিরা শেষে সিংড়া যাওয়ার সময় সদর উপজেলার সড়ক ও জনপথ ভবনের সামনে তৎকালীন সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের নির্দেশে এজাহারনামীয় আসামি সাগর, জাহিদ, কোয়েল, সেলিম মিলন, সায়েম হোসেন উজ্জ্বল, খোকন, মলয়, আমিনুল ইসলাম, কানন, সজীব, সবুজ, রাসু, মাহাতাব, সৌমেন, স্বপন, শিহাব, হৃদয়, আলিফ, জনি, সুমন, সুমন মৃধাসহ আরও ১০ থেকে ১২ জন আমার মোটরসাইকেল থামিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর ও গুলি করে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় চিকিৎসা শেষে থানায় নিজে হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করেন ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন।
দ্বিতীয় মামলার এজাহারে যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম আফতাব উল্লেখ করেন, গত বছরের ২৯ অক্টোবর মসজিদ থেকে ফজরের নামাজ শেষে নিজ বাড়িতে ফেরার সময় স্টেশন এলাকার মামুন ফার্মেসির সামনে তৎকালীন সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের নির্দেশে এজাহারনামীয় আসামি সাগর, জাহিদুর, জামিল হোসেন মিলন, সায়েম হোসেন উজ্জ্বল, মলয় কুমার, আমিনুল ইসলাম আজম, কোয়েল, কানন, সেলিম, সজীব, সবুজ, মাহাতাব, সৌমেনসহ আরও ১০ থেকে ১২ জন মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমার পথরোধ করে।
তারা এলোপাতাড়ি মারধর ও গুলি করে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় চিকিৎসা শেষে থানায় নিজে হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করেন যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম আফতাব।
এ ব্যাপারে জানার জন্য নাটোর সদর থানার ওসি মিজানুর রহমানের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন না ধরায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সাভার (ঢাকা) : মারধর ও গুলি করে মানুষ হত্যা করাসহ হুকুমের অভিযোগে সাভারের আশুলিয়া থানায় ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১১৯ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাতে আশুলিয়া থানায় মামলাটি করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় আল-সাবুর (১৬) নামে এক স্কুলছাত্র নিহতের ঘটনায় তার প্রতিবেশী পরিচয়ে সাহিদ হাসান মিঠু নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন। পরে অভিযোগটি তদন্ত করে সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি নথিভুক্ত করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
নিহত আল-সাবুর আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়ার শিমুলতলা এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে জামগড়া শাহীন স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ত। আল-সাবুরের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর থানার মহাদেবপুর। তার বাবার নাম নায়েদ ওরফে জাকির।
মামলার আসামিরা হলেন ঢাকা-১৯ -এর সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন, ইয়ারপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ ভূঁইয়া, আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার, পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ানসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১১৯ জনের নাম রয়েছে। মামলায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের একাধিক নেতাকর্মীকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদীর দাবি, ঘটনার দিন বাইপাইল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলছিল। ওই সময় সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম, তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদসহ মামলার ১ থেকে ১৫ নম্বর পর্যন্ত আসামিদের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা আল-সাবুরকে ধরে লাঠিপেটা ও গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ কালবেলাকে বলেন, একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
বড়াইগ্রাম (নাটোর) : নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, তার আপন চার ভাগিনাসহ ৬২ জনের নামে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
বনপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন গাজী বাদী হয়ে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাতে থানায় মামলাটি করেন। বাদী নাসির উদ্দিন গাজী উপজেলার মালিপাড়া মহল্লার জামাল গাজীর ছেলে।
মামলায় আসামিরা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মো. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, ভাগিনা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি জামাল উদ্দিন মিয়াজী, শামসুদ্দিন শেরশাহ, জহির উদ্দিন ও বাহাউদ্দিন, বনপাড়া পৌর যুবলীগ সভাপতি জাকির সরকার, ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম ওরফে টিটু, ইউনুস আলী, সজীব হোসেন, আশরাফুল মণ্ডল, তোহা মিয়া, সৈনিক লীগ নেতা রুবেল বালি, সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মজনু মিয়া, ওমর ফারুক পাটোয়ারী, রফিকুল ইসলাম ওরফে পারভেজ, সিরাজ পাটোয়ারী, সাইমুন পাটোয়ারী, হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, রুবেল হোসেন, তুহিন ব্যাপারী, সাইফুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম। মামলায় আরও ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বনপাড়া ল্যাবরেটরি স্কুলে ঢুকে অভিযুক্তরা তিনটি মোটরসাইকেল ও একটি ল্যাপটপ পুড়িয়ে দেয়। এ সময় বাদী নাসির গাজী, তার ছেলে মুন্না ও বনপাড়া পৌর কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন মনির আগুন নেভাতে গেলে ডা. পাটোয়ারী ও জাকির সরকারের হুকুমে আসামিরা হাঁসুয়া, রামদা ও জিআই পাইপ নিয়ে আক্রমণ করে।
এ সময় তারা রামদা এবং হাঁসুয়া দিয়ে নাসির, মুন্না ও কাউন্সিলর মনিরকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। একই সঙ্গে অন্যরা পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।
তাদের উদ্ধারের জন্য মালিপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমান জুয়েল, আব্দুল মমিন, হারোয়া গ্রামের আব্দুল্লাহ আল আওয়াল মমিন, মহিষভাঙ্গা গ্রামের আনাস মোল্লা এগিয়ে গেলে আসামিরা তাদেরও পিটিয়ে জখম করে। পরে আহতদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তারা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি শফিউল আযম খান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চট্টগাম : চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য এমএ লতিফকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। শনিবার (১৭ আগস্ট) ভোরে গ্রেপ্তারের পর সাত দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয় তাকে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালত শুনানি শেষে তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এরশাদ নামের এক ব্যক্তি গুলিতে আহত হন। পরে তিনি শুক্রবার ডবলমুরিং থানায় এমএ লতিফসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় এম এ লতিফ গুলি করার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করা হয়।
ডবলমুরিং থানার ওসি ফজলুর কাদের পাটোয়ারী গণমাধ্যমকে জানান, সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য এম এ লতিফকে বায়েজিদ বোস্তামী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ফেনী : ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগের গুলিতে নিহতের ঘটনায় নতুন করে আরও দুটি মামলা করা হয়েছে। এ নিয়ে পৃথক পাঁচটি হত্যা মামলায় ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীকে প্রধান করে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ ১ হাজার ৬২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) মহিপালে নিহতদের মধ্যে ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সরোয়ার জাহান মাসুদের মা বিবি কুলসুম বাদী হয়ে ১৩৪ জনকে আসামি করে ও আরও ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নিহত মাসুদ দাগনভূঞা উপজেলার উত্তর জয়লস্কর এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে।
এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহত ফেনী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণের দাদা মো. জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া বাদী হয়ে ১০৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ রুহুল আমিন জানান, এ ঘটনায় দায়েরকৃত পৃথক মামলায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে একই ঘটনায় দায়েরকৃত পৃথক তিনটি মামলায় জেলার অন্তত ৩০ জন জনপ্রতিনিধিসহ ৯৮০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় ছাত্রদের দিকে গুলি করার নির্দেশনা ও অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, ফেনী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান করিম উল্লাহ বিকম ওরফে রেন্সু করিম, যুবলীগ নেতা জিয়া উদ্দিন বাবলু প্রমুখ।
No comments