বেড়েই চলেছে ডিএসই’র বাজার মূলধন

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় ছিল। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ৫৮ হাজার কোটি টাকার উপরে বেড়ে যায়। আর প্রধান মূল্য সূচক বাড়ে প্রায় ৭০০ পয়েন্ট। সরকার পতনের পর শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন হলেও নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম সপ্তাহটি বিনিয়োগকারীদের জন্য খুব একটা ভালো যায়নি। উল্লম্ফনের পর গত সপ্তাহ জুড়ে শেয়ারবাজারে কিছুটা দরপতন হয়েছে। ফলে কমেছে মূল্যসূচক। তবে এই দরপতনের পরও বেড়েছে বাজার মূলধন। সেই সঙ্গে গড় লেনদেনও বেড়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পড়ে গত ৫ই আগস্ট পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ থেকে চলে যান। এরপর ৬ই আগস্ট থেকে আবার সরকারি- বেসরকারি সব অফিস খুলে দেয়া হয়। ফলে শেয়ারবাজারেও লেনদেন চালু হয়।

এরপর সেই সপ্তাহে লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন হয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম সপ্তাহটি শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য খুব একটা ভালো যায়নি।

গত সপ্তাহ জুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০৫টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২৭৮টির। আর ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৩ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে ৫ হাজার ৫১ কোটি টাকা বা ০.৭২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ৫০ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা বা ৭.৭৪ শতাংশ।

এদিকে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে কমেছে ২০.৯৭ পয়েন্ট বা ০.৩৫ শতাংশ। এর আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৫৯০.৮৭ পয়েন্ট বা ১১.০৮ শতাংশ। প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি কমেছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক। গত সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ১০.১৯ পয়েন্ট বা ০.৮০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১০৯.৫৩ পয়েন্ট বা ৯.৪০ শতাংশ।

তবে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহেও বেড়েছে। গত সপ্তাহ জুড়ে এই সূচকটি বেড়েছে ৪৬.৬২ পয়েন্ট বা ২.১৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৩১.৮৮ পয়েন্ট বা ১২.২০ শতাংশ। মূল্যসূচক মিশ্র থাকলেও লেনদেনের গতি বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৮২ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৮৩৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৪৪৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা বা ৫৩.৫৭ শতাংশ।

সপ্তাহ জুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১০০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ৩৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, রবি, আইএফআইসি ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, টেকনো ড্রাগস, ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ার এবং এবি ব্যাংক।

No comments

Powered by Blogger.