যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর গুলিতে রক্তাক্ত দিনগুলো

যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় দুটি হামলায় বন্দুকধারীর গুলিতে ২৯ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল ১১টার দিকে টেক্সাসে ওয়ালমার্টের একটি স্টোরে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ২০ জন নিহত হন। ওদিকে এর ১৩ ঘণ্টা পর ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ডেটনে গোলাগুলিতে বন্দুকধারীসহ ৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
মাত্র ১৩ ঘণ্টারও কম ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রে দুই বন্দুক হামলায় ২৯ জন নিহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি
বেশ কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক এ ধরনের হামলার সম্মুখীন হচ্ছে। সাধারণ নাগরিকেরা জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রতিনিয়ত সংকট অনুভব করেছেন। সময়ের পরিক্রমায় যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত গত কয়েক বছরের উল্লেখযোগ্য হামলাগুলো এক নজরে দেখে নেওয়া যাক—
২০১২ সাল
কলোরাডো সিনেমা: জুলাই মাসে কলোরাডো শহরের অরোরা থিয়েটারে এক অনুষ্ঠানে তরুণ বন্দুকধারীর গুলিতে ১২ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় ৭০ জনেরও বেশি মানুষ সেদিন আহত হয়েছিল।
স্যান্ডি হুক: ডিসেম্বর মাসে স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলে অ্যাডাম ল্যানজা নামের এক ২০ বছর বয়সী তরুণ ২০ জন শিশুসহ মোট ২৬ জনকে হত্যা করেন। এই হত্যাকাণ্ডের আগে তিনি নিজের মাকে হত্যা করেছিলেন। পরে ওই তরুণ আত্মহত্যা করেছিলেন।
২০১৫ সাল
ক্যালিফোর্নিয়া অফিস পার্টি: ডিসেম্বর মাসে ক্যালিফোর্নিয়ার সানবার্নারডিনো শহরের একটি সামাজিক সেবা কেন্দ্রে বড়দিনের পার্টিতে এক উগ্রপন্থী মুসলিম দম্পতি হামলা চালান। এতে ১৪ জন নিহত ও ২২ জন আহত হয়। আক্রমণকারীরা পুলিশের হাতে মারা যায়।
২০১৬ সাল
ফ্লোরিডা ক্লাব: জুন মাসে অরল্যান্ডো শহরের একটি নৈশক্লাবে এক অস্ত্রধারী ঢুকে গোলাগুলি শুরু করেন। ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৪৯। ইসলামপন্থী জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেছিলেন আক্রমণকারী। পরে পুলিশের গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়।
২০১৭ সালে ভেগাস কনসার্ট হামলায় ৫৮ জন নিহত হয়। ছবি: এএফপি
২০১৭ সাল
ভেগাস কনসার্ট: ৬৪ বছর বয়সী এক অবসরপ্রাপ্ত অ্যাকাউন্ট্যান্ট কনসার্টের ভিড়ে হামলা চালান। এতে ৫৮ জন নিহত হয়। এই হামলায় অন্তত ৫৫০ জন আহত হয়। এই হামলাকে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বর্বর হত্যাকাণ্ড বলে মনে করা হয়।
টেক্সাস চার্চ: নভেম্বর মাসে টেক্সাসের একটি স্থানীয় চার্চে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ২৬ বছর বয়সী এক আততায়ীর হাতে ২৫ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়। আক্রমণকারী পরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। তবে নিজের গাড়িতেই তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। গুলির আঘাতের ধরন দেখে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধরে নেয় পুলিশ।
২০১৮ ফ্লোরিডা হাই স্কুলে সাবেক এ শিক্ষার্থী হামলা চালায়। এতে ওই স্কুলের ১৪ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়। ছবি: এএফপি
২০১৮ সাল
ফ্লোরিডা হাইস্কুল: মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলের এক সাবেক শিক্ষার্থী ফেব্রুয়ারি মাসে স্কুলে গিয়ে ১৪ জন শিক্ষার্থী ও তিনজন কর্মচারীকে হত্যা করে। হামলার বেশ কিছু দিন আগে ওই শিক্ষার্থীকে নিয়মভঙ্গের কারণে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
ক্যালিফোর্নিয়া বার: ২৮ বছর বয়সী এক মেরিন সদস্য ক্যালিফোর্নিয়ার একটি মিউজিক বারে হামলা চালান। এতে ১২ জন নিহত হয়। হামলাকারী কিছুদিন পর আত্মহত্যা করেন।
পিটসবার্গের উপাসনালয়: অক্টোবর মাসে পিটসবার্গে অবস্থিত ‘ট্রি অব লাইফ’ নামের একটি ইহুদি উপাসনালয়ে প্রার্থনা চলাকালে ৪৬ বছর বয়সী এক বন্দুকধারী হামলা চালান। এই হামলায় ১১ জন নিহত হন। ইহুদিবিদ্বেষী মনোভাব এই হত্যাকাণ্ডের মূল ইন্ধন বলে ধারণা করা হয়।
সান্তা ফে’র হাইস্কুল: ১৭ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্র একটি শটগান ও রিভলবার নিয়ে নিজের স্কুলেই হামলা চালায়। এতে আটজন শিক্ষার্থীসহ মোট ১২ জন নিহত হয়। অস্ত্রগুলো হত্যাকারীর বাবার নামে নিবন্ধন করা ছিল। হত্যাকারীকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়।
২০১৯ সাল
ভার্জিনিয়া সমুদ্রসৈকত: ৪০ বছর বয়সী এক প্রকৌশলী ভার্জিনিয়া সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন একটি পৌর ভবনে ১২ জনকে হত্যা করেন। পরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তিনি মারা যান।
>>>তথ্যসূত্র: ডন

No comments

Powered by Blogger.