প্রথমবারের মতো সামরিক স্কুল চালুর পরিকল্পনা করেছে ভারতের আরএসএস

ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আদর্শিক মূল সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) সহযোগী একটি প্রতিষ্ঠান এমন একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়েছে, যেটার সাথে সামরিক বাহিনীর যোগসূত্র রয়েছে।

স্কুলটির নামকরণ করা হয়েছে সাবেক আরএসএস প্রধান প্রফেসর রাজেন্দ্র সিংয়ের নাম অনুসারে, যিনি রাজ্জু ভাইয়া নামেই বেশি পরিচিত। উত্তর প্রদেশের বুলান্দশাহরের শিকারপুরে এই স্কুলটি গড়ে তোলা হচ্ছে। সরকারী ও বেসরকারী স্কুলের জন্য সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশানের যে সিলেবাস রয়েছে, সেটাই এখানে অনুসরণ করা হবে। একাডেমিক শিক্ষার বাইরে শিক্ষার্থীদের শারীরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে যাতে তারা গ্রাজুয়েশানের পর সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে পারে।

স্কুলের পরিচিতিপত্রে লেখা রয়েছে যে, ভারতের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীতে প্রায় ১০,০০০ কর্মকর্তার ঘাটতি রয়েছে এবং এখন যে সব রাষ্ট্রায়ত্ব সেনা স্কুল রয়েছে, তারা এই চাহিদা মেটাতে পারছে না।

স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ড. অজয় কুমার গয়াল বলেন, “দেশে প্রথমবারের মতো নিরীক্ষা হিসেবে এই স্কুলটি চালু করছি আমরা এবং ভবিষ্যতে এই মডেলটা দেশের অন্যান্য জায়গায় কপি করা যেতে পারে”। স্কুলটি আরএসএসের সহ-প্রতিষ্ঠান বিদ্যা মন্দিরের অধীনে পরিচালিত হবে। পুরো দেশে এই প্রতিষ্ঠানের অধীনে বর্তমানে ২০,০০০ এর বেশি স্কুল পরিচালিত হচ্ছে।

প্রথম বছরে ১৬০ জন শিক্ষার্থী নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে স্কুলটি। এর মধ্যে ৫৬ জন নেয়া হবে সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের পরিবার থেকে।

গয়াল বলেন, এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা যাতে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীতে যোগ দিতে পারে, সেজন্য একটা সুনির্দিষ্ট কারিকুলামের প্রস্তাব দিবেন সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। যদিও নিয়মিত প্রশিক্ষক হিসেবে সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষিত কাউকে নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা স্কুল কর্তৃপক্ষের নেই।

স্কুল ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। এতে আলাদা একাডেমিক ভবন, শিক্ষার্থীদের জন্য হোস্টেল, শিক্ষক ও স্টাফদের জন্য আবাসিক ভবন, মেডিকেল সুবিধা ও বিশাল একটা স্টেডিয়াম থাকবে। এই পুরো স্কুল প্রকল্পের জন্য ব্যায় হবে প্রায় ৪০ কোটি রুপি।

আরএসএস শক্তভাবে সেনা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণকে সমর্থন করে। গয়াল বলেন, “এই স্কুল শিশুদের দেশকে সেবা করার স্বপ্ন পূরণ করবে যেহেতু তারা ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য হওয়ার সুযোগ পাবে”।

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ একটি ডানপন্থী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ভারতের সমাজে জাতীয়তাবাদী মানসিকতা তৈরির জন্য তারা কাজ করে থাকে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে পরিণত হয়েছে এটি। এর সহযোগি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা শিক্ষা ও দাতব্য সেবা নিয়ে কাজ করে।

No comments

Powered by Blogger.