সমুদ্রপথে মিয়ানমার থেকে গরুর স্রোত

সীমান্তে কড়াকড়ি ও পশু আমদানি বন্ধ থাকায় ভারতীয় গরু বাংলাদেশ প্রবেশ করতে পারছে না। আর এই সুযোগে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে আসছে বিপুলসংখ্যক গরু-মহিষ। গত দুদিনে বৈধ পথেই দুই হাজার ২২৮ গবাদিপশু টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডরে এসেছে।

ট্রলারে করে নাফ নদ দিয়ে এসব গরু-মহিষ নিয়ে আসা হচ্ছে। প্রতি ট্রলারে ১০০ থেকে ১৫০টি পর্যন্ত গরু আসছে। শাহপরীর দ্বীপ থেকে পশুগুলো নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার বেপারীরা। দেখতে দেশীয় গরুর মতো হওয়ায় কোরবানির পশুর হাটে এসব গরু-মহিষের চাহিদাও বেশি থাকবে বলে মনে করছেন তারা।

তবে এর বিপরীতে প্রচুর রাজস্বও আদায় হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা। আমদানির পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বেপারিরা এসব গরু-মহিষ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকারি দামে।

শুল্ক স্টেশন তথ্যমতে, বৈরী আবহাওয়া ও মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কের ঘাটতির কারণে বেশ কিছু দিন পশু আমদানি বন্ধ ছিল। তবে কোরবানি ঘিরে সমুদ্রপথে স্রোতের মতো গরু ও মহিষ আসছে।

গত দুদিনেই মিয়ানমার থেকে এসেছে দুই হাজার ২১২ গরু ও ৬১৬টি মহিষ। আর ১০ হাজার ৯৫টি গরু-মহিষ এসেছে পুরো জুলাই মাসে। অথচ গত বছরের এই সময়ে মিয়ানমার থেকে মাত্র ৫ হাজার গরু-মহিষ এসেছিল। অর্থাৎ এবার আমদানি হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এ ছাড়া চলতি বছরের সাত মাসে এসব পশু থেকে রাজস্ব এসেছে দুই কোটি ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

এখানকার গবাদিপশু স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ সারাদেশে সরবরাহ হয়ে থাকে উল্লেখ করে পশু আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম জানান, শাহপরীর দ্বীপ করিডর দিয়ে সারাবছরই মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আমদানি হয়ে থাকে। তবে ঈদুল আজহার সময় বাড়তি চাহিদা থাকায় অধিক পরিমাণে গরু-মহিষ আমদানি করা হচ্ছে।

আমদানিকারক মোহাম্মদ সোহেল বলেন, গতকালও দুটি ট্রলারে প্রায় আড়াইশ গরু-মহিষ এসেছে। দেশের চাহিদা পূরণে এসব কোরবানির পশু আমদানি করছি। তা ছাড়া ঈদ আসতে কয়েক দিন বাকি।

এবিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) এবিএম এস দোহা বলেন, শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গরু-মহিষ আসছে। বেপারী-ব্যবসায়ীদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এখান থেকে পশু সরবরাহের ক্ষেত্রে পথে যেন কোনো চাঁদাবাজি না হয় তাও নজরে রাখা হচ্ছে বলে জানান ওসি।

No comments

Powered by Blogger.