ভারত সীমান্তে আবারো চীনের সেনাবাহিনীর অবস্থান

বিরোধপূর্ণ ডোকলাম নিয়ে আবারো মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও চীন। সিকিম-ভুটান-তিব্বতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল ডোকলামে প্রায় পাকাপাকিভাবে ঘাঁটি গেড়েছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ চীনা সৈন্য। ইতোমধ্যে তারা তৈরি করে ফেলেছে দুটি হেলিপ্যাড, উচ্চমানের রাস্তা, বেশ কিছু আগাম তৈরি করা ছাউনি এবং নিত্য প্রয়োজনের দোকানও। এদিকে, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, ভারত তার কৌশলগত উদ্দেশ্যে সফল হয়েছে। ডোকলাম থেকে দক্ষিণ দিকে জামফেরি সেতুবন্ধ পেরিয়ে নতুন কোনো রাস্তা তৈরি করতে পারেনি চীন, তবে পিপলস লিবারেশন আর্মির সেনা নিজেদের অবস্থান প্রায় পাকাপাকিই করে ফেলেছে এ অঞ্চলে। এর আগে সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে এবং অক্টোবর-নভেম্বর মাসে চীনা সেনা টহল দিতে আসত এ অঞ্চলে। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়া। এবছর আগস্টের ২৮ তারিখে প্রায় ৭৩ দিনের টানাপোড়েনের পর ডোকলাম সীমান্ত থেকে সরে গিয়েছিল ভারত ও চীনের সেনাবাহিনী। এই প্রথম শীতে এই অঞ্চলে থেকে গেছে চীনা সৈন্যদল। চীন যে এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে সে বিষয়ে সেপ্টেম্বর মাসেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। ডোকলাম দখলের পিছনে চীনের প্রধান লক্ষ্যই হল চুম্বি উপত্যকার আয়তন বাড়ানো। উল্লেখ্য, ভুটান ডোকলামকে নিজেদের দাবি করে। ভারতও তাদের দাবিকেই সমর্থন দেয়।
ডোকলামের মতো ঘটনা ভবিষ্যতে বাড়তে পারে : ভারতীয় সেনাপ্রধান নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৭ আগস্ট ২০১৭ ভারতের সঙ্গে সীমান্তের ‘স্থিতাবস্থা বদলাতে’ চাইছে চীন। এ কারণে ডোকলামের মতো অচলাবস্থা ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। তিনি বলেছেন, চীনের এই পদক্ষেপ সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। বিপিন রাওয়াত আরও বলেছেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার বিন্যাসের ক্ষেত্রে ভিন্ন মত থাকার জন্য কিছু কিছু জায়গায় বিতর্ক রয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করার ঘটনা ঘটেই থাকে এবং কয়েকটি ক্ষেত্রে তা সীমান্তে মোতায়েন দুই পক্ষের বাহিনীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করে। এ ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য দুই দেশের মধ্যে যৌথ ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান। শনিবার সাবিত্রীবাই ফুলে পুনে বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাওয়াত বলেছেন, ডোকলাম নিয়ে চীনের সঙ্গে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে ভারতীয় বাহিনী বলেছে যে, দুই পক্ষকেই গত ১৬ জুনের আগের অবস্থায় ফিরে যেতে হবে। কিন্তু এ ব্যাপারে এখনও কোনো সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক স্তরে অচলাবস্থার সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেছেন, কূটনৈতিকভাবে এবং রাজনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের প্রয়োজন। জেনারেল রাওয়াত সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সীমান্তের অন্য সেক্টরের বাহিনীদের মধ্যে কোনোরকম আত্মসন্তুষ্টির অবকাশই নেই। তিনি বলেছেন, এরকম আর ঘটবে না ভাবার চেয়ে প্রস্তুত ও সতর্ক থাকাই বাঞ্ছনীয়। তাই তিনি বাহিনীকে সদাসতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন। ভারতীয় সেনাপ্রধান আরও বলেছেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও আর্থিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করছে চীন। তিনি আরও বলেছেন, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ওপর দিয়ে চীন-পাকিস্তান আর্থিক করিডোর ভারতের সার্বভৌমত্বের পক্ষে একটা চ্যালেঞ্জ। এনডিটিভি।

No comments

Powered by Blogger.