'টিয়ারশেলই চোখে আঘাত সিদ্দিকুরের'

পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলের আঘাতেই তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুরের চোখ আহত হয়েছে। পুলিশের গঠিত তদন্ত কমিটি সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। কমিটি এই ঘটনায় দুই কর্মকর্তাসহ সাত পুলিশ সদস্যকে দায়ী করেছেন। আজ সোমবার এই তদন্ত প্রতিবেদন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার কাছে জমা দেয়ার কথা রয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্যরা হচ্ছেন- ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) আশরাফুল আলম। তদন্ত কমিটি সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার (এসপি) মর্যাদার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় শাহবাগ থানা পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ পাচ কনস্টেবলের আক্রমণাত্মক আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের বিভিন্ন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। কমিটি তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে। সূত্র জানায়, অভিযুক্তরা হলেন- শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু জাফর আলী বিশ্বাস ও পরিদর্শক (অভিযান) আবুল কালাম আজাদ। এ ছাড়া দাঙ্গা দমন বিভাগের (পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট-পিওএম) পাঁচ কনস্টেবলের নামও আছে। গত ২০ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির সময় পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান চোখে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার পর প্রথমে তাকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এবং পরবর্তীতে সরকারি খরচে ভারতের চেন্নাই পাঠানো হয়। ঘটনার পর অভিযোগ উঠে, পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলের (কাঁদানে গ্যাস) আঘাতে সিদ্দিকুর চোখে আহত হন। কিন্তু ডিএমপির পক্ষ থেকে প্রথমে তা অস্বীকার করা হয়। পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচিত হতে থাকলে সরকার সিদ্দিকুরের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। এছাড়া পুলিশ ঘটনাটি তদন্তে দুটি পৃথক কমিটি গঠন করে। এদিকে এ ঘটনায় গঠিত আরেকটি কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় চেয়েছেন বলে সূত্র জানায়। পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রশাসন) নাবিদ কামাল শৈবালকে প্রধান করে ওই কমিটি গঠন করা হয়।   বর্তমানে চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে চিকিৎসাধীন আছেন সিদ্দিকুর। গত শুক্রবার তার অপারেশন হয়। শনিবার চোখের ব্যান্ডেজ খোলা হলে বাম চোখে সামান্য আলো দেখতে পান তিনি। তবে দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসেনি। তার দৃষ্টিশক্তি ফিরবে কি ফিরবে না তা নিশ্চিত হতে আরও দুই মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছে শংকর নেত্রালয়ের চিকিৎসকরা।

No comments

Powered by Blogger.