ঈদের পর লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

ঈদের পর লন্ডনে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী বড় ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, তারেক রহমানের কাছে তিনি যাবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। দলের সিনিয়র এক নেতা বলেছেন, খালেদা জিয়ার আসন্ন এই সফর নিছক চিকিৎসার উদ্দেশ্যেই নয়, এর রাজনৈতিক তাৎপর্যও রয়েছে। সামনে একাদশ সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে বিএনপি কোন প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে, আন্দোলন কর্মসূচি ঠিক কবে নাগাদ গ্রহণ করা হবে, নির্বাচন নিয়ে পর্যবেক্ষক মহল ও আন্তর্জাতিক মহলের কী মনোভাব এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দলের শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে সেখানে আলোচনা হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে। বিএনপির দ্বিতীয় প্রধান নেতা তারেক রহমান প্রায় ১০ বছর ধরে লন্ডনে রয়েছেন। এক-এগারোর সরকারের সময়ে কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। তখন থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। তার সাথে রয়েছেন স্ত্রী জোবায়দা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান। তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ এক নেতা গতকাল জানান, এখন অনেকটাই সুস্থ তারেক রহমান। লন্ডনে রাজনৈতিক ও ঘরোয়া নানা কর্মসূচিতে প্রায়ই অংশ নিচ্ছেন। পাশাপাশি বিএনপির নীতি-নির্ধারণী নানা বিষয়ে মা’কে পরামর্শ দিচ্ছেন। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। দুই মাসের বেশি সময় তখন তিনি লন্ডনে ছিলেন। ওই সময়েও রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক নানা বিষয়ে দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হয়। দেশে ফিরে দলের ষষ্ঠ কাউন্সিলের দিনণ ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া। বিএনপির এক নেতা জানান, এবার লন্ডনে ছেলের কাছে চেয়ারপারসনের যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য চোখের চিকিৎসা। সাম্প্রতিক সময়ে তার চোখে কিছু সমস্যা হচ্ছে।
এর আগেও তিনি লন্ডনে চোখের চিকিৎসা নিয়েছেন।  চিকিৎসার জন্য চেয়ারপারসন লন্ডন যাওয়ার চিন্তাভাবনা করলেও তার এই সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন বিএনপির নেতারা। তারা মনে করেন, ভবিষ্যতে দলের করণীয়, বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে দলের চূড়ান্ত অবস্থান কী হবে, সেই বিষয়ে ছেলে তারেক রহমানের পরামর্শ নেবেন তিনি। আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়া, না নেয়ার বিষয়ে দু’জনের মধ্যে আলোচনা এবং জরুরি সিদ্ধান্ত হতে পারে। এ ছাড়া সাংগঠনিক বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে। বিশেষ করে দলের স্থায়ী কমিটির তিনটি শূন্য পদে কাদের নিয়োগ দেয়া যায় সেই আলোচনাও হতে পারে তাদের মধ্যে। চেয়ারপারসন কার্যালয়ের সাথে যুক্ত এক নেতা বলেন, এ সফর হবে ‘কলা বেচা ও রথ দেখার মতো। তারেক রহমান আগে থেকেই লন্ডনে রয়েছেন, আর দলীয় প্রধান চিকিৎসার জন্য সেখানে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে দেশের চলমান রাজনীতি ও দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, সিদ্ধান্ত হবে এটাই স্বাভাবিক। এ ছাড়া কূটনীতিকভাবেও এ সফর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.