ছাত্র খুনের ঘটনায় ১৬ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার

চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র খুনের ঘটনায় ২৩ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মধ্যে ১৬ জনকে স্থায়ী ও সাতজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তদন্ত কমিটির সুপারিশে ২৩ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২৩ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও তদন্ত কমিটির প্রধান আহমেদ রাজীব চৌধুরী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ২৩তম ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠান নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ২৯ মার্চ ওয়াসা ক্যাম্পাসে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় নাসিম আহমেদ ওরফে সোহেলকে (২৪)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর শিক্ষার্থী ও নগর ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১৬ আসামির সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হলো। তাঁরা হলেন—আশরাফুল ইসলাম, ওয়াহিদুজ্জামান নিশান, মো. জিয়াউল হায়দার চৌধুরী, এস এম গোলাম মোস্তফা, তামিম উল আলম, মো. ইব্রাহিম সোহান, কাজী মো. জয়নাল আবেদীন, সাইফ উদ্দিন, মো. আবু জাহেদ ওরফে উজ্জ্বল, মো. নিজাম উদ্দিন ওরফে আবিদ, সাইকুল মোহাম্মদ তারেক, নুরুল ফয়সাল ওরফে স্যাম, মো. সাইফুল ইসলাম সাকিব, আবু ফয়েজ, মো. রাশেদুল হক ওরফে ইরফান ও মো. নাজমুল হক। তাঁদের মধ্যে প্রথম পাঁচজনকে ঘটনার দিন ক্যাম্পাস থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা বর্তমানে কারাগারে আছেন। স্থায়ী বহিষ্কৃতদের মধ্যে সাইকুল মোহাম্মদ তারেক ও নাজমুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। স্থায়ী বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৬ শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত সব ডিগ্রি বাতিল করা হলো। এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে কেউ অভিযোগ থেকে খালাস পেলে বা অভিযোগপত্র থেকে বাদ পড়লে শাস্তি পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবেন। শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কোনো প্রোগ্রামে অধ্যয়নের জন্য ভর্তি হতে পারবেন না। এদিকে গত ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি মারামারির উদ্দেশ্যে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা মজুত করা এবং ২৯ মার্চ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উপস্থিত থাকার কারণে সাত শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন—মোজাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ মাসুক কালাম, কায়সারুল আলম, মনির আহমেদ, কাজী মোহাম্মদ লিয়াকত, মোহাম্মদ নিজামুল গালিব ইমন ও কাজী মো. আশরাফ সায়েদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আহমেদ রাজীব চৌধুরী বলেন, এই সাত শিক্ষার্থীকে কেন আজীবন বহিষ্কার করা হবে না, তা ১০ এপ্রিলের মধ্যে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে হবে। কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

No comments

Powered by Blogger.