যেভাবে গুপ্ত সম্পদের পাহাড়ে ইলহাম আলিয়েভ

২০০৩ সালের ৩১ অক্টোবর। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানসহ দুই হাজারের বেশি সম্মানিত অতিথিতে কানায় কানায় পূর্ণ রেসপাবলিকা প্যালেস। তাঁদের সামনে জ্বালানি-সমৃদ্ধ আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ইলহাম আলিয়েভ।
ওই বছর কেবল দেশের মসনদেই বসেননি আলিয়েভ। বিভিন্ন কর রেয়াত অঞ্চলের একগুচ্ছ গোপন কোম্পানির মাধ্যমে তিনি, তাঁর পরিবারের সদস্য, উপদেষ্টা ও মিত্ররা বিদেশে বিলাসবহুল সব বাড়ি, দেশের মূল্যবান বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও প্রাকৃতিক সম্পদের নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে একটি বৃহৎ স্বর্ণখনিতে আলিয়েভের পরিবারের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ, যা এখন পর্যন্ত অজানা ছিল। পানামাভিত্তিক আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মোসাক ফনসেকার ফাঁস হওয়া নথির মাধ্যমে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। নথি মোতাবেক, আলিয়েভ প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার মাস কয়েক আগে আজারবাইজানের করমন্ত্রী ফাজিল মাম্মাদভ আতা হোল্ডিং নামের একটি কোম্পানি গড়ে তুলতে শুরু করেন। অচিরেই ফুলে-ফেঁপে সেটি দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীতে পরিণত হয়। মাম্মাদভ পরবর্তী সময়ে তাঁর ব্যবসায় যুক্ত হতে আলিয়েভের পরিবারের প্রতি আহ্বান জানান। এর মাধ্যমে ব্যবসায়িক সুবিধা ও রাজনৈতিক অংশীদারত্ব আরও পাকাপোক্ত হয়। আজারবাইজানের ব্যাংকিং খাত, টেলিযোগাযোগ, নির্মাণ খাত, খনিশিল্প, তেল-গ্যাস খাতে উল্লেখযোগ্য স্বার্থ রয়েছে আতা হোল্ডিংয়ের। সর্বশেষ (২০১৪ সালে) দাখিল করা প্রতিবেদন মোতাবেক, শিল্পগোষ্ঠীটির ৪৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্পদ রয়েছে। ফাঁস হওয়া নথি বলছে, করমন্ত্রী মাম্মাদভ মোসাক ফনসেকার মাধ্যমে পানামায় একটি কোম্পানি খোলেন, যার নাম এফএম ম্যানেজমেন্ট হোল্ডিং গ্রুপ। পরে তিনি একটি অফশোর ফাউন্ডেশন গড়ে তোলেন, যার নাম ইউএফ ইউনিভার্স ফাউন্ডেশন। দুই বছর পর ২০০৫ সালে প্রেসিডেন্ট আলিয়েভের স্ত্রী মেহরিবান আলিয়েভা এই ফাউন্ডেশনের দুই ব্যবস্থাপকের একজন হন। অপর ব্যবস্থাপক মাম্মাদভ নিজেই।

No comments

Powered by Blogger.