শ্রমিক নেতা আমিনুল হত্যা মামলা পুনঃতদন্তের দাবি

শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম
শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় ‘পলাতক’ মোস্তাফিজুর রহমানকে আসামি করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দেওয়া অভিযোগপত্রে প্রকৃত হত্যাকারীদের আড়াল করা হয়েছে। তাই এ মামলাটি স্বচ্ছতার সঙ্গে পুনঃতদন্ত করতে হবে। আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স (ডিআরইউ) ইউনিটির গোলটেবিল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলে মামলাটি পুনরায় তদন্তসহ তিন দফা দাবি জানানো হয়। আয়োজনে ছিল বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন ও বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটি (বিসিডব্লিউএস)। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি বাবুল আখতার। তিনি বলেন, আমিনুলের হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা ছিলেন মোস্তাফিজ। তিনি এনএসআইয়ের সোর্স ছিলেন। তাঁকে ধরিয়ে দিতে দুবার পুরস্কার ঘোষণা করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এখন পর্যন্ত তিনি ধরা পড়েননি। বাবুল বলেন, একটি পরিবারের সদস্য নিখোঁজ হলে তাঁর পরিবারে হাহাকার থাকে। কিন্তু মোস্তাফিজের পরিবারে কোনো হাহাকার নেই। এমনকি মোস্তাফিজকে খুঁজে পেতে তাদের তৎপরতাও নেই। তিনি অভিযোগ করেন, মোস্তাফিজকে যাদের ধরার কথা, তারাই যদি লুকিয়ে রাখে, সে ক্ষেত্রে কোনো দিনই ধরা পড়বে না। তিনি বলেন, আমিনুলকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেটা একজন ব্যক্তিকে দিয়ে সম্ভব নয়। মোস্তাফিজকে সামনে এনে একমাত্র আসামি করে হত্যাকারী অন্যদের আড়ালে রাখা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমিনুলের গায়ে যেসব পোশাক ছিল, সেগুলোর ডিএনএ টেস্ট করাতে হবে। একই সঙ্গে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিতে হবে। আমিনুল ইসলাম বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির (বিসিডব্লিউএস) সংগঠক ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের নেতা ছিলেন। ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল আশুলিয়া থেকে নিখোঁজ হওয়ার পরদিন তাঁর ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানা এলাকায়। বেওয়ারিশ হিসেবে আমিনুলের লাশ উদ্ধারের পর ঘাটাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহীন মিয়া অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে আমিনুলের ভাই রফিকুল ইসলাম এ ঘটনায় মোস্তাফিজুর রহমান ও বোরকা পরা অজ্ঞাতনামা এক নারীকে আসামি করে ঘাটাইল থানায় আরেকটি এজাহার দেন। এতে বলা হয়, ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমিনুলের আশুলিয়ার সংগঠনের কার্যালয়ে যান মোস্তাফিজুর। সঙ্গে ছিলেন ওই নারী। তাঁরা আমিনুলকে ডেকে নেওয়ার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এজাহারটি পুলিশের করা হত্যা মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। মামলাটি প্রথমে ঘাটাইল থানার পুলিশ তদন্ত করে। পরে তদন্ত করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে মামলাটির তদন্তভার সিআইডিতে স্থানান্তরিত হয়। এক বছর তদন্ত শেষে গত নভেম্বর মাসে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল কবীর মামলার অভিযোগপত্র টাঙ্গাইল জেলা আদালতে জমা দেন। আমিনুল হত্যার পর থেকে মোস্তাফিজুর ‘পলাতক’।

No comments

Powered by Blogger.