জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান বি. চৌধুরীর

দেশের সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে অবিলম্বে একটি জাতীয় সরকার গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। সেই সঙ্গে দেশে আইএস-এর অস্তিত্ব আছে কি-না সে বিষয়েও সরকারের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেন তিনি। নিজের ৮৬তম জন্মদিন পালন উপলক্ষে বারিধারার বাসভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি জানান। সরকারকে উদ্দেশ্য করে সাবেক এ প্রেসিডেন্ট বলেন, ঘুমালে চলবে না। একচোখা নীতি ছাড়তে হবে। দেশের বর্তমান সঙ্কটজনক পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে একটি জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। তবে জাতীয় সরকারে বর্তমান সংসদের লোকজনকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। কারণ এই সংসদের লোকজন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। বর্তমান জাতীয় সংসদের আগের সংসদের লোকজন এবং অন্যান্য দল ও শ্রেণী-পেশার মধ্য থেকে ভাল মানুষ নিয়ে এই জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। জিয়াউর রহমানের আমলে কৃষি, শিক্ষা ও শিল্প বিপ্লবের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। দেশে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে, দারিদ্র্য বিমোচনে দেশ অনেকদূর এগিয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও ভাল সাফল্য এসেছে। কিন্তু এসব রাজনৈতিক ও বৈজ্ঞানিক অর্জন সত্ত্বেও আমরা গণতন্ত্র পেলাম না। মানুষ ভোট দিতে পারে না। ছাপ্পা মেরে মানুষের ভোট দিয়ে দেওয়া হয়। শতকরা পাঁচ ভাগ ভোট নিয়ে সরকার চলছে। দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা নেই। নেই আইনের শাসন। সাগর-রুনির হত্যা, নারায়ণগঞ্জের তকি হত্যা ও সাতখুনের বিচার এখনও হয়নি। সাতখুনের মূল আসামি নূর হোসেনকে এখনও কলকাতা থেকে ফেরত আনতে পারেনি এই সরকার। বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট বলেন, অতীতে ট্রাকে ট্রাকে অস্ত্র আনা হয়েছে। কিন্তু বিচার হয়নি, জড়িতদের ধরা হয়নি। ফলে এদের সাহস বেড়ে গেছে। ইতালি ও জাপানের নাগরিককে হত্যা করা হলো। কিন্তু হত্যার সঙ্গে জড়িত একজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি। এতে আমাদের প্রতি বিদেশীদের আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, পুলিশের আগেই যদি প্রধানমন্ত্রী, তার ছেলে ও অন্য মন্ত্রীরা বলে দেন বিএনপি, জামায়াত এ সব হত্যার সঙ্গে জড়িত, তা হলে পুলিশ কি করবে? পুলিশকে পুলিশের কাজ করতে দিতে হবে। বিচারের বিষয়ে বিচারককেই বলতে দিতে হবে। সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশে আইএস’র অস্তিত্ব আছে কি না, তা সরকারকে সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে। ক্রিকেটে আমাদের বিশাল মর্যাদা ও অর্জনকে ম্লান এবং পাকিস্তানের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশকে দুবাই গিয়ে খেলতে হলে কোথায় যাবে আমাদের ক্রিকেট? অনেক রকম ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দেশে আইএস বা অন্য কোন সন্ত্রাসী সংগঠন আছে কিনা বলে দেন না কেন? আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, প্রফেসর আবু মোজাফফর আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মো. ইউসুফ, শাহ আহম্মেদ বাদল, বেগ মাহাতাব, সাহিদুর রহমান, মাহবুব আলী, জানে আলম হাওলাদার, আইনুল হক, আসাদুজ্জামান বাচ্চু, মাহফুজুর রহমান, বিএম নিজাম, সাইফুল ইসলাম শোভন, শহীদুল হক ভূইয়া, মামুনুর রশিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। আলোচনা সভা শেষে বি. চৌধুরী ৮৬তম জন্মদিনের কেক কেটে তা নিজে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিতরণ করেন। এ সময় বি. চৌধুরীর সহধর্মিণী হাসিনা ওয়ার্দা চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.