তেলাকুচা by সৌরভ মাহমুদ

তেলাকুচার ফল। দেখতে অনেকটা
শসার মতোl ছবি: লেখক
তেলাকুচা লতার ফুল। গাজীপুর থেকে গত এপ্রিলে তোলা
গাজীপুরের পুবাইলের একটি গ্রাম। ছোট্ট গ্রামটির নাম ভাদুন। বিচিত্র সব গাছপালার সমাহার এই গ্রামে। এই গ্রামেই আছে ‘জল জঙ্গলের বাড়ি’। এ বাড়ির প্রায় সব গাছপালার ফলফলাদি পাখি ও অন্য বন্য প্রাণীদের জন্য বরাদ্দ। এখানে পাখিরা আপন মনে ঘুরে বেড়ায়। সেই বাড়ির জঙ্গলে বেশ তেলাকুচার ঝোপ আছে। পাকা ফল খেতে পাখিরা সব সময় ভিড় করে সেখানে। সাদা ফুলের মধু সংগ্রহে আসে কালো ভোমরা।
গ্রামের কোনো ঝোপের ধারে কিংবা শহরের ঝোপময় সড়কের কোনো তরুর ডালে সহজদৃষ্ট একটি লতাজাতীয় উদ্ভিদ হলো তেলাকুচা। এঁকেবেঁকে অন্য গাছ এমনকি বিদ্যুতের তার আঁকড়ে বেড়ে ওঠে তেলাকুচা লতা। এ লতার পাতার রস ডায়াবেটিস রোগে বিশেষ উপকারী। গ্রামে এ পাতার রস মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। শাক হিসেবে খাওয়া হয় এ পাতা। পাড়া-মহল্লায় টুকরিতে করে এ শাক বিক্রি হতে দেখা যায়। পাতার রসে আছে ক্যালসিয়াম, লোহা, ভিটামিন এ ও সি। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র প্রাকৃতিকভাবে তেলাকুচা জন্মে।
তেলাকুচা Cucurbitaceae পরিবারভুক্ত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Coccinia grandis। সবুজ ফল পেকে সিঁদুর লাল বর্ণ ধারণ করার সঙ্গে সঙ্গে পাখিরা এ লতার ঝোপে বিচরণ শুরু করে। ফল দেখতে শসার মতো। স্বাদ তেতো। তেলাকুচার পাকা ফল ফলভোগী পাখির খুবই প্রিয়। বিশেষ করে বুলবুলি, বসন্তবৌড়ী, শালিক, বেনেবউ পাকা ফলের লোভে সারাক্ষণই এ লতার ঝোপে বিচরণ করে। সারা বছরই ফুল ফোটে। তবে বর্ষায় ফুলের প্রাচুর্য বেশি থাকে। ফুলের রং সাদা, দেখতে অনেকটা লাউ ফুলের মতো।

No comments

Powered by Blogger.