৩১ জুলাইয়ের প্রহর গুনছে ছিটমহলবাসী by অমর সাহা

কোচবিহারের শিবপ্রসাদ মুশতারি ছিটমহলে একজন জেলা
প্রশাসনের সেই বিজ্ঞপ্তি পড়ছেন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি।
বাংলাদেশ ও ভারতের ভেতরে থাকা উভয় দেশের ১৬২টি ছিটমহল বিনিময়ের চুক্তির পর ছিটমহলে খুশির হাওয়া বইছে। দুই দেশের এই ছিটমহলের বাসিন্দারা এখন ৩১ জুলাইয়ের প্রহর গুনছে। ওই দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে এই ছিটমহলগুলো হস্তান্তর করা হবে।
ভারত তাদের ভূখণ্ডে থাকা ৫১টি বাংলাদেশি ছিটমহলের মালিকানা পেয়ে যাবে। বাংলাদেশ মালিকানা পাবে তাদের ভূখণ্ডে থাকা ১১১টি ভারতীয় ছিটমহলের। এই খুশিতে স্থানীয় বাসিন্দারা নতুন স্বপ্নে বিভোর। ৩১ জুলাইয়ের মাহেন্দ্রক্ষণকে স্মরণে রাখার জন্য ওই দিন রাতে ভারতের ছিটমহল মেতে উঠবে এক আনন্দ উৎসবে। পরের দিন ১ আগস্ট ছিটমহলজুড়ে পালন করা হবে বিজয় উৎসব। সে কথা জানালেন ছিটমহলবাসীরাই।
কোচবিহারের জেলা প্রশাসন থেকে ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশের ছিটমহলবাসীর জন্য জারি করা হয়েছে এক বিজ্ঞপ্তি। এতে বলা হয়েছে, ৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে ভারতের ভেতরে থাকা সব বাংলাদেশি ছিটমহল ভারতের ভূখণ্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, সব ছিটমহলবাসী এবং একই সঙ্গে ওই জনগণনার পর যেসব শিশু ভূমিষ্ঠ হয়েছে, তারাও ভারতীয় নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে যেসব ছিটমহলবাসী বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বহাল রেখে ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে ফিরে যেতে চান, তাঁদের ৬ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত সময়ে ফরম পূরণ করে জানাতে হবে। ১ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তাদের প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যেই এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে ইচ্ছুক ছিটমহলবাসীদের প্রয়োজনীয় ট্রাভেল পাস ইস্যু করা হবে। যেসব ছিটমহলবাসী বাংলাদেশে ফিরে যেতে চান, তাঁরা চিলাহাটি-হলদিবাড়ি, বুড়িমারি-চ্যাংড়াবান্ধা, সাহেবগঞ্জ-বাগবন্দর সীমান্ত পথ দিয়ে বাংলাদেশে ফিরে যেতে পারবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যাঁরা বাংলাদেশ যাবেন, তাঁরা টাকা-পয়সাসহ অস্থাবর সব সম্পত্তি সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবেন। ১ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে নিজ নিজ এলাকার জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে জমি বিক্রি করা যাবে। সরেজমিনে এই প্রতিনিধি ছিটমহলে দেখেন, ছিটমহলবাসীর হাতে হাতে ফিরছে এই বিজ্ঞপ্তি। কোন্‌ দেশে থাকবেন, কী করা দরকার—এসব নিয়ে চলছে শলাপরামর্শ।

No comments

Powered by Blogger.