সেলফি তোলায় লেবার পার্টি থেকে বহিষ্কার আমরান

সেলফি তুলছেন আমরান হোসেনসহ অন্যরা। ছবি: প্রথম আলো
উনিসিয়ায় তিউনিসিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার পরদিন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলার জন্য যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি থেকে বহিষ্কার হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমরান হোসেন। গত মে মাসে অনুষ্ঠিত দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনে নর্থ ইস্ট হ্যাম্পশায়ার আসনে লেবার দলের প‌ক্ষে এমপি পদে প্রার্থী হয়েছিলেন আমরান। তিনি নির্বাচনে হেরে যান।
আমরানের আচরণকে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতদের প্রতি ‘অসম্মানজনক এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেছে লেবার পার্টি। গতকাল সোমবার রাতে দলটি আমরানকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ২৯ বছর বয়সী আমরান প্রথমবার এমপি পদে প্রার্থী হয়েই প্রচারণায় বেশ সাড়া ফেলেছিলেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়াশোনা করা আমরান জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ইংল্যান্ড শাখার ন্যাশনাল ডেলিভারি কর্মকর্তা। আমরানের আদি বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায়।
তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিস থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণের সুছে এলাকার সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন ইম্পেরিয়াল মারহাবা হোটেলে গত শুক্রবার দুপুরে এক লোক এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে ৩৮ জন নিহত হয়। আহত হয় আরও ৩৬ জন। নিহতদের মধ্যে অন্ততপক্ষে ৩০ জন ব্রিটিশ পর্যটক ছিলেন। এ সময় ব্রিটিশ রাজনীতিক আমরান হোসেন চার বন্ধুসহ তিউনিসিয়ায় ছিলেন। তারা মারহাবা সৈকতের কাছেই একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন। তাঁরা হামলার পরদিন শনিবার ঘটনাস্থলে যান। সেখানে তোলা কিছু সেলফি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়ার পর থেকেই এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
আমরান হোসেন তাঁর ফেসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, হামলার পরদিন শনিবার তাদের যুক্তরাজ্যে ফেরার সময় নির্ধারিত ছিল। হতাহতদের প্রতি সহমর্মিতা এবং শ্রদ্ধা জানাতে তাঁরা শনিবার ফুল নিয়ে মারহাবা সৈকতে যান। সেখানে তাঁরা প্রায় ৩০ মিনিট অবস্থান করেন।
আমরান হোসেন বলেন, তিউনিসিয়ার সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তিনি বেশ মর্মাহত। হতাহতদের স্মৃতিকে ধারণ করে রাখতেই তাঁরা সেখানে ছবি তুলেছিলেন। তিনি আরও বলেন, তাদের হোটেল থেকে একটি হাতের ব্যান্ড পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে তিনি ওই ব্যান্ড না খোলার সিদ্ধান্ত¯নিয়েছেন। এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন আমরান।
এদিকে নিহত ব্রিটিশ নাগরিকদের স্মরণে আগামী শুক্রবার দুপুর ১২টায় দেশব্যাপী এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন গতকাল সোমবার পার্লামেন্টে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ২০০৫ সালের ৭ জুলাই লন্ডনে বোমা হামলার পর তিউনিসিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় সবচেয়ে বেশি ব্রিটিশ নাগরিকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।

No comments

Powered by Blogger.