মানুষের দেহে প্রবেশ করবে কৃত্রিম রক্ত by নাজমুল হক ইমন

ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) এই প্রথমবারের মতো গবেষণাগারে উৎপাদিত ‘সিনথেটিক রক্ত’ ব্যবহারের চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে এই রক্তকণিকা প্রথমবারের মতো ব্যবহার শুরুর চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
এনএইচএসের এক বিজ্ঞানী জানান, কৃত্রিম লোহিত কণিকার প্রথম ব্যবহার শুরু হতে পারে ২০১৭ সালের মধ্যে। নবজাতক শিশু কিংবা প্রাপ্তবয়স্কদের রক্তকণিকা থেকে এই কৃত্রিম লোহিত কণিকা তৈরি করা হচ্ছে। পৃথিবীতে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম উপায়ে তৈরি রক্ত ব্যবহার করা হবে কোনো মানুষের দেহে। কয়েক টেবিল চামচ রক্ত পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে। মানুষের দেহে এটি কতটা খাপ খাবে তা সহজেই বোঝা যাবে। এই পরীক্ষা সফল হলে জরুরি মুহূর্তে প্রয়োজন মতো রক্ত উৎপাদন করে নেয়া যাবে গবেষণাগারে।
বিশেষ করে সিকেল-সেল অ্যানেমিয়া বা থ্যালাসেমিয়ার মতো রোগী যাদের প্রতিদিন রক্ত পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়, তাদের জন্যে কৃত্রিম রক্ত জীবন বাঁচাতে সহজ হবে।
এনএইচএস ব্লাড অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্টের গবেষক নিক ওয়াটকিনস জানান, কারো দেহে অন্য কেউ রক্ত দিলে তা কৃত্রিম রক্তের সঙ্গে কতটুকু পার্থক্য সৃষ্টি করে তা পরিষ্কার হবে এ পরীক্ষার মাধ্যমে। সন্তান জন্মের সময় নাভী থেকে সংগৃহীত রক্ত থেকেও কৃত্রিম রক্ত সংগ্রহ করা সম্ভব। এ রক্ত গবেষণাগারে নিয়ে পরিপক্ব করা হয় এবং কৃত্রিম লোহিত কণিকা প্রস্তুত করা হয়। কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত এই লোহিত কণিকা সুস্থ মানুষের লোহিত কণিকার সঙ্গে তুলনা করে দেখা গেছে, দুটো কণিকার কার্যক্রম একই ধরনের। ২০১৭ সালে মানবদেহে এই কণিকা প্রয়োগসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ৫ বছরের গবেষণার অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। ব্রিস্টল, ক্যামব্রিজ এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা সম্মিলিতভাবে এ গবেষণার কাজে নিযুক্ত রয়েছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্কটিশ ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন সার্ভিস অ্যান্ড দ্য ওয়েলকাম ট্রাস্ট। কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন রক্ত কণিকার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলো রোগাক্রান্ত নয় এবং এতে কোনো ভাইরাস আক্রমণেরও সম্ভাবনা নেই। সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট

No comments

Powered by Blogger.