কলেজছাত্রী আমেনা হত্যা: পুলিশ সন্দেহ করছে নিকটাত্মীয়দের

আমেনা আক্তার ওরফে রেশমা
কলেজছাত্রী আমেনা আক্তার ওরফে রেশমা (১৮) হত্যায় নিকটাত্মীয়রা জড়িত বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। কর্মকর্তারা বলছেন, নিহত মেয়েটির মা-বাবা দুজনেরই একাধিক বিয়ে। তাঁরা (মা-বাবা) পরস্পরের আগের পক্ষের ছেলেমেয়েদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরের রাইনখোলায় নিজেদের ফ্ল্যাট থেকে বিসিআইসি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আমেনার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মেয়েটির সৎভাই রবিন ও বাসার নিরাপত্তাকর্মী মিলনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
মিরপুর থানা-পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, নিহত আমেনার বাবা মো. আলমগীর মতিঝিলের বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (পিয়ন)। তাঁর তিন স্ত্রীর মধ্যে আমেনার মা মরিয়ম দ্বিতীয়। যে ফ্ল্যাটটি থেকে আমেনার লাশ উদ্ধার করা হয়, সেই ফ্ল্যাটটি সম্প্রতি আমেনার নামে লিখে দিয়েছেন তাঁর মা মরিয়ম। এ নিয়েই আলমগীরের প্রথম স্ত্রীর ছেলে, তৃতীয় স্ত্রী ও মরিয়মের আগের পক্ষের মেয়ে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এ বিষয়ে আমেনার মা মরিয়ম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই মিরপুর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। তবে মামলার এজাহারে মরিয়মের বড় সতিনের ছেলে রবিন ও ছোট সতিন খোদেজা হুমকি দিতেন বলে উল্লেখ করা হয়।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহউদ্দীন বলেন, আলমগীরের প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলে বেশ কিছুদিন ধরে মরিয়মকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। দুই মাস আগে রবিনের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় একটি জিডিও করেছিলেন মরিয়ম। এ ছাড়া আলমগীরের তৃতীয় স্ত্রী ঝালকাঠিতে থাকেন। তাঁকে ঘিরেও নিজের সন্দেহের কথা বলেছেন মরিয়ম। আবার আলমগীরের অভিযোগ, মরিয়মের প্রথম পক্ষের বড় মেয়ে ও মেয়ের প্রেমিক এসে হুমকি দিয়ে গেছেন। মরিয়মের মেয়ের দাবি, শুধু আমেনাকে নয়, তাঁকেও ফ্ল্যাটের অংশীদারত্ব দিতে হবে। আলমগীর আরও বলেছেন, মরিয়ম সুদে টাকা খাটানোর ব্যবসা করেন। তা নিয়েও কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর বিবাদ রয়েছে। এসব নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রবিন ও নিরাপত্তাকর্মী মিলনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে দোতলার ফ্ল্যাটের বারান্দায় আমেনাকে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে শুনেছেন প্রতিবেশীদের অনেকে। পরক্ষণেই তাঁকে টেনেহিঁচড়ে এক নারী ভেতরে নিয়ে গিয়েছেন বলেও দেখেছেন প্রতিবেশীরা। তবে মেয়েটিকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি।

No comments

Powered by Blogger.