টানা বর্ষণে মংলায় তিন সহস্রাধিক চিংড়িঘের ভেসে গেছে

কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে বাগেরহাটের মংলা শহর
ও শহরতলির বেশির ভাগ জায়গায় জলাবদ্ধতা
দেখা দিয়েছে। পৌর কবরস্থান এলাকা থেকে তোলা
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমি লঘুচাপের প্রভাবে গত তিন দিনের ভারী বর্ষণে বাগেরহাটের মংলা উপজেলার তিন সহস্রাধিক চিংড়িঘের ভেসে গেছে। মংলা শহর ও শহরতলির সর্বত্র হাঁটুপানি জমেছে। পৌর শহরের সব নর্দমা ও খাল বন্ধ থাকায় পানি নামতে পারছে না। চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন পৌরসভার বাসিন্দারা।
মংলা উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার ভোর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ভারী বর্ষণের কারণে মংলা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় তিন সহস্রাধিক চিংড়িঘের ও পাঁচ সহস্রাধিক পুকুর পানিতে ভেসে গেছে। অনেক এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে থাকায় পথচারীসহ যানবাহনের চালকেরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। বাড়ির উঠানসহ সবকিছু পানিতে ডুবে রয়েছে। অনেকে রান্নাও করতে পারছেন না।
উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা নিয়ামত শিকদার জানান, বিরামহীন ভারী বর্ষণে উপজেলার অধিকাংশ চিংড়িঘের ও পুকুর ভেসে গেছে। প্রাথমিকভাবে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের কুমারখালী, ঠাকুরানী ও কাইনমারী খালে স্লুইসগেট নির্মাণকাজ চলার ফলে বাঁধ দিয়ে রাখা হয়েছে। এতে বৃষ্টিতে জমা পৌর এলাকার পানি নিষ্কাষিত হতে পারছে না। বাঁধের মধ্যে ছোট আকারে পাইপ দেওয়া হলেও তা দিয়ে পানি নামতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন সড়কের সংস্কারকাজ চলায় অধিকাংশ নর্দমা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। শহরতলির শেলাবুনিয়া, কুমারখালী, মিয়াপাড়া, জয় বাংলা, চরকানা, সিগনাল টাওয়ার, কবরস্থানসহ অধিকাংশ আবাসিক এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে পানি নিষ্কাশনের আবেদন নিবেদন জানিয়েও সাড়া মিলছে না।
এ ব্যাপারে মংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র জুলফিকার আলী বলেন, স্লুইসগেট দিয়ে যাতে পানি নিষ্কাশন করা যায় তার জন্য পাম্পিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলী প্রিন্স জানান, টানা বৃষ্টিপাত ও বৃষ্টির পানিতে এলাকা বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় দরিদ্র লোকজন কাজকর্ম করতে পারছেন না। তাই দরিদ্র ব্যক্তিদের মাঝে ইতিমধ্যে পাঁচ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ত্রাণ সহায়তা প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
এদিকে ভারী বৃষ্টির কারণে বুধবার ভোর থেকে মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল, হাড়বাড়িয়া এবং বহির্নোঙরে অবস্থানরত ছয়টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাসের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) কাজী মুক্তাদির।

No comments

Powered by Blogger.