আমার রক্ত বেঈমানি করে না -সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম

দপ্তরবিহীন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, আমার বাবা (বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলাম) বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেঈমানি করেননি। সততার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। বেঈমানি না করে বঙ্গবন্ধুর জন্য মৃত্যুকে বরণ করেছেন। এটাই আমার রক্ত। কিশোরগঞ্জ আর হোসেনপুরের সম্পদ। আমি সেই রক্তের উত্তরসূরি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হারানো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গতকাল রাজধানীর বেইলী রোডে অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে এক ইফতার অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি লাভের জন্য রাজনীতি করি না। আমার পিতা সততার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। নেতার জন্য মৃত্যুবরণ করেছেন। এটাই আমার রক্ত। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ও প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে আশরাফ ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বন্দি হওয়ার প্রেক্ষাপটে দলে সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসেন। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে শেখ হাসিনার সরকারে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আশরাফ। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনা পুনরায় সরকার গঠন করলে দলের সাধারণ সম্পাদককে একই মন্ত্রণালয়ই দেন শেখ হাসিনা। গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আশরাফকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের পর ৩রা নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়। ঢাকাস্থ হোসেনপুর উপজেলা সমিতি আয়োজিত ইফতার? মাহফিলে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সৈয়দ আশরাফ। তার নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জ-১ এর অন্তর্ভুক্ত এই উপজেলা। হোসেনপুরবাসীর উদ্দেশ্যে আশরাফ  বলেন, আমার পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেঈমানি করেন নাই। আমি মন্ত্রী হই বা না হই, রাজনীতি করি বা না করি, সব সময় হোসেনপুরবাসীর সঙ্গে থাকবো। ইফতারের প্রায় ১৫ মিনিট আগে বক্তব্য দেয়ার জন্য মাইক হাতে নিলেও দুই মিনিট বক্তব্য দিয়ে তিনি বক্তব্য শেষ করতে চান। তখন উপস্থিত এলাকাবাসী বলতে থাকেন ‘নেতা আরও বলেন’- তারপরও তিনি আর বক্তব্য বাড়াননি। এর আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হোসেনপুর সমিতির নেতারা বক্তব্যে আশরাফের সততা ও নিষ্ঠা নিয়ে বক্তব্য দেন। অনেকে সৈয়দ আশরাফের দপ্তর কেড়ে নেয়ায় ক্ষোভও প্রকাশ করেন। হোসেনপুর এলাকার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহিম বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তে আমরা কিশোরগঞ্জ ও হোসেনপুরবাসী ক্ষুব্ধ। তবে আমরা নেতার (আশরাফ) সঙ্গে আছি এবং থাকবো। হোসেনপুর উপজেলা সমিতির সভাপতি মো. নুরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সাবেক অতিরিক্ত সচিব শাহ মো. মনসুরুল হক, আইডিবি’র প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মো. আব্দুস ছাত্তার, সমিতির সাধারণ সম্পাদক খাদেমুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ারুল কবীর বক্তব্য রাখেন।

No comments

Powered by Blogger.