আরও একজন গ্রেপ্তার, তিন দিনের রিমান্ডে

সামিউল হত্যা
সিলেটের শিশু শেখ মো. সামিউল আলম রাজনকে (১৪) নির্যাতনের ঘটনায় আয়াজ আলী নামের আরও একজন প্রত্যক্ষদর্শীকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সামিউলকে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনাস্থল সিলেট নগরের কুমারগাঁও বাসস্টেশনের শেখপাড়া থেকে গত শনিবার রাত দুইটার দিকে আয়াজ আলীকে (৪৫) ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে। গতকাল শনিবার দুপুরে তাকে সিলেট মহানগর হাকিম আদালতে (প্রথম) হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার। আদালতের বিচারক মো. সাহেদুল করিম তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত সমন্বয়কারী ও সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মো. রহমত উল্লাহ প্রথম আলোকে জানান, আদালত থেকে আয়াজ আলীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে।
সামিউলকে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় এই নিয়ে গ্রেপ্তারের সংখ্যা ১২-তে দাঁড়াল। এ ছাড়া পালিয়ে সৌদি আরব গিয়ে ধরা পড়েছে ঘটনার ‘মূল হোতা’ কামরুল ইসলাম। সেখানে পুলিশ হেফাজতে আছে সে। আসামিদের মধ্যে এ পর্যন্ত পাঁচজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
আয়াজ আলীর বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে। পেশায় রংমিস্ত্রি আয়াজ সপরিবারে শেখপাড়ার একটি ভাড়া
বাসায় বসবাস করেন। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শিশু সামিউলকে নির্যাতন করার শুরুর দিকে আয়াজ প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। পরে আসামিদের গ্রেপ্তার ও ঘটনার বিচারের দাবিতে এলাকাবাসীর আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন।
আয়াজের স্ত্রী রাশেদা আক্তার জানান, রাতে ডিবি পুলিশ ঘটনার ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে আবার ছেড়ে দেওয়া হবে জানিয়ে আয়াজকে বাসা থেকে নিয়ে যায়। ঘটনার শুরুর দিকে তাঁর স্বামী প্রত্যক্ষদর্শী হলেও পরে এ ঘটনার একজন প্রতিবাদকারী ছিলেন।
পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি: পুলিশের তদন্তে পুলিশ দায়ী চিহ্নিত হওয়ায় এবার তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি উঠেছে। গত শুক্রবার রাতে সিলেট নগরের সোনাতলা বাজারে এলাকাবাসীর উদ্যোগে সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। গতকাল ‘সিলেট বিভাগ জনস্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদ’ এক বিবৃতিতেও এ দাবি জানিয়েছে।
সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চুরির অভিযোগ তুলে ৮ জুলাই খুঁটির সঙ্গে সামিউলকে বেঁধে রোলার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নির্যাতনকারীরাই সামিউলকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করে। সামিউলের লাশ ফেলতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়েন প্রধান আসামি মুহিত আলম। এ ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।

No comments

Powered by Blogger.