ইফতারে রকমারি জিলাপি by শিহাব জিশান

রোদেলা বিকেল রেস্তোরাঁয় ইফতারি কেনায় ব্যস্ত ক্রেতারা
ক্যান্ডির জিলাপি কেনার জন্য লেগে
থাকে লম্বা লাইন l প্রথম আলো
ইফতারের সময় ভাজাভুজি ও ঝালের সঙ্গে কোনো মিষ্টির পদ না থাকলে ঠিক যেন পূর্ণতা পায় না। সে জন্যই ফিরনি, হালুয়া, মিষ্টি দই কিংবা নিদেনপক্ষে জিলাপিটা ইফতারে থাক চাই-ই। ইফতারির বাজারে এখনো নানা পদের সঙ্গে জিলাপি বিক্রির চলটাও বেশ। হাজারি, জাফরানি মিল্ক, শাহি, রেশমিসহ নানা স্বাদের জিলাপি পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয়। চট্টগ্রামের রোদেলা বিকেল ও ক্যান্ডি রেস্তোরাঁর ইফতারির নানা পদ নিয়ে আজকের আয়োজন।
রোদেলা বিকেল: স্বাস্থ্যকর ইফতারের নিশ্চয়তা নিয়ে এবারও ইফতারের আয়োজন করেছে কাজীর দেউড়ির স্টেডিয়ামপাড়ার রেস্তোরাঁ রোদেলা বিকেল। এখানে জাফরানি মিল্ক জিলাপির জন্য ক্রেতাদের লম্বা লাইনই বলে দেয় এ পদটির চাহিদার কথা। প্রতি কেজি জিলাপির মূল্য রাখা হয়েছে ৪৪০ টাকা। অন্যান্য মিষ্টান্ন পদের মধ্যে বেশি চাহিদা পাটিসাপটা পিঠা, কিশমিশ ফিরনি ও স্পেশাল লাচ্ছির। তবে শুধু মিষ্টান্ন নয়, এ নানা পদের খাবারের মধ্যে আকর্ষণীয় মেজবানি গরুর মাংস। প্রতি কেজি মেজবানি মাংস কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ৬০০ টাকা। এ ছাড়া রোদেলা বিকেলের ইফতারের বিশেষ আয়োজনে রয়েছে প্রিমিয়াম মাটন হালিম ও চিকেন হালিম। এ দুই পদের হালিম ক্রয়ে ক্রেতাদের গুনতে হবে প্রতি কেজিতে ৫৫০ টাকা। রয়েছে টকদই দিয়ে তৈরি চিকেন ললিপপ, ইন্ডিয়ান মরিচের গুঁড়া ও গরমমসলায় তৈরি চিকেন তন্দুরি, স্পেশাল লাচ্ছা পরোটা, বিশেষ মিষ্টিদই ও টকদই, বিফ বল, চিকেন রোল, প্রন তন্দুরিসহ আকর্ষণীয় ২০ পদের খাবারের সমারোহ।
ক্রেতাদের সুবিধার্থে রয়েছে দুই ধরনের প্যাকেজ। মেজবানের গরুর মাংস, সুইট লাচ্ছিসহ ১০ পদের খাবারের প্যাকেজ-১–এর দাম রাখা হয়েছে ৩৫০ টাকা। ৫৫০ টাকায় পাওয়া যাবে প্যাকেজ-২। প্রিমিয়াম মাটন হালিম, বিফ আকনি বিরিয়ানিসহ এই প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ১২ পদের খাবার। রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সাইনু সাবের বলেন, ‘খাবারের মানের দিকে গুরুত্ব দেওয়ায় ক্রেতাদের এবার বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। সূর্যমুখী তেল, স্পেনের জাফরান, খাঁটি গুঁড়ো দুধ, ঘিসহ সেরা উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় এখানকার প্রতিটি খাবার।’
ক্যান্ডি: নগরের ব্যস্ততম এলাকা জিইসি মোড়ের সাদামাটা একটা দোকান ‘ক্যান্ডি’। এ দোকানের চেহারা দেখলে মনে হবে না এখানে এত ভালো জিলাপি পাওয়া যায়। দোকানের সামনেই পাশাপাশি দুটি খোলা কড়াইয়ে হালকা আঁচে ভাজা হচ্ছে জিলাপি। ওখানেই চুলার পাশে রাখা আছে শিরার পাত্র। লাল করে ভাজা জিলাপি তুলে এনে রাখা হচ্ছে সেই পাত্রে। গরম জিলাপি পাত্রে রাখামাত্রই কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা। জিলাপির কারিগরের যেন দম ফেলার ফুসরতটুকুও নেই। একের পর এক কড়াইয়ের খোলাভর্তি জিলাপি বানানোতেই মনোযোগ তাঁদের। কিন্তু এরপরও ক্যান্ডির সামনে জিলাপি কেনার জন্য লেগে আছে লম্বা লাইন। নগরের বহদ্দারহাট থেকে ক্যান্ডিতে জিলাপি কিনতে এসেছেন শফিকুল হাসান। তিনি বলেন, ‘দামে কম এবং মানে ভালো হওয়ায় প্রতিদিন এখান থেকেই জিলাপি কিনতে আসি আমি। এখানকার জিলাপির স্বাদ অনন্য হওয়ায় প্রায় দশ থেকে বিশ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে জিলাপি কিনতেও বিরক্ত লাগে না।’ ক্যান্ডিতে প্রতি কেজি জিলাপি কিনতে গুনতে হবে ১৫০ টাকা। শুধু জিলাপি নয়, ক্যান্ডির ইফতার আয়োজনে রয়েছে নানা স্বাদের হালিম। প্রতি কেজি বিফ হালিম ৪০০ টাকা, প্রতি কেজি মাটন ও চিকেন হালিম ৪৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ক্যান্ডিতে। এ ছাড়া বয়েছে বিরিয়ানি। প্রতি প্লেট বিফ বিরিয়ানি ৭০ টাকা ও চিকেন বিরিয়ানি ৯০ টাকায় বিক্রি হয়।

No comments

Powered by Blogger.