নারী নির্যাতন রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘একরকম ব্যর্থ’: আনিসুজ্জামান

নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
পাশে অন্য বক্তারা। ছবি: ফোকাস বাংলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, পয়লা বৈশাখে যৌন হয়রানির ঘটনার বিচারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘একরকম ব্যর্থ’ হয়েছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনা সরকারের কাছে যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে না।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত জাতীয় সংলাপ শেষে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। আয়োজকেরা বলেন, এই কমিটি নারী নির্যাতন প্রতিরোধে একটি সুপারিশমালা তৈরি করবে। সুপারিশগুলোর বাস্তবায়নে শিগগিরই একটি জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। সংলাপে আয়োজকেরা নারী নির্যাতন রোধে রাজনৈতিক দলগুলোকে জোরালোভাবে এগিয়ে আসার কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘পয়লা বৈশাখের পর দুই মাস কেটে গেল। প্রতিকার পাইনি। কেউ আইনের আওতায় আসেনি। একুশের বইমেলায় অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের কেউ ধরা পড়েনি। ওয়াশিকুরের হত্যাকারীদের পুলিশ ধরেনি। এটা এক ধরনের ব্যর্থতা। এসব বিষয় সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার আহ্বান জানাই। গুরুত্বের ঘাটতি আছে।’
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর নারী নির্যাতন বন্ধে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড প্রসারের কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কাজগুলো না করে কথা বলছি অনেক বেশি। শিশুরা যান্ত্রিকভাবে বড় হচ্ছে। তারা সবাই নৈতিকতার শিক্ষা পাচ্ছে না। আমি আমার এলাকায় একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন করেছি। তাদের দায়িত্ব দিয়েছি প্রতিটি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় সংস্কৃতি চর্চার। আমি বলব প্রতিটি সংগঠন নিজ নিজ এলাকায় এক একটি স্কুলের দায়িত্ব নিক।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শুধু ক্লাসরুমের শিক্ষা দিয়ে নারী নির্যাতন বন্ধ হবে না। এ জন্য পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষা দরকার।
অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ পয়লা বৈশাখে যৌন নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগের সক্রিয়ভাবে যুক্ত না হওয়ার পক্ষে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘একটি অংশ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য নিজেদের ব্যানার পরিবর্তন করে অন্য ব্যানার নিয়ে নেমেছিল। এটাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানাতে চেয়েছিল। আসুন রাজনৈতিক হীন স্বার্থের জন্য একজন একজনকে দোষারোপ না করি।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, সারওযার আলী, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, আইনজীবী তানিয়া আমির, সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, হাসান আরিফ, নাট্যকার মান্নান হীরা প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.