বার্সার ত্রাতা ম্যাথিউ

মেসি, নেইমার, সুয়ারেজ- এমন ত্রিফলা আক্রমণভাগ যে দলের সম্পদ, তাদের ঈর্ষা না করে কি পারা যায়! কিন্তু রোববার রাতে এই তিনজনের কেউ নন, বার্সেলোনার ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন জেরেমি ম্যাথিউ। জাভির ফ্রিকিকে উড়ে গিয়ে এই ফরাসি সেন্টার-ব্যাক হেডে যখন ম্যাচের একমাত্র গোল করেন, শেষ বাঁশি বাজতে তখন ১৬ মিনিট বাকি। সেল্টা ভিগো হয়তো ভেবেছিল, এক পয়েন্ট নিয়ে তারা মাঠ ছাড়বে। কিন্তু নিয়তি ম্যাথিউকে পাঠিয়ে দেন বার্সার ত্রাতা হিসেবে।
দিনের প্রথম ম্যাচে রোনাল্ডোর পাঁচ গোলে রিয়াল মাদ্রিদ ৯-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল গ্রানাডাকে। তাই সেল্টা ভিগোর মাঠে মেসি-ম্যাজিক দেখার জন্য উন্মুখ ছিল কাতালান সমর্থকরা। কিন্তু আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডকে প্রথমার্ধে অনেকটা বোতলবন্দি করে রাখে সেল্টা। দ্বিতীয়ার্ধে বার্সা গা-ঝাড়া দিয়ে ওঠে। তবুও অচলায়তন ভাঙতে ৭৪ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় তাদের। ম্যাচ শেষে ম্যাথিউ যা বলেছেন, তার জায়গায় অন্য কেউ হলেও একই কথা বলতেন, ‘পুরো তিন পয়েন্ট পেয়েছি। এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’ তার সংযোজন, ‘রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে গোল করি কিংবা সেল্টার বিপক্ষে- আমার কাছে দুটিই সমান।’ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালের চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে যাওয়া কাতালানরা এখন শিরোপা-স্বপ্নে বিভোর। নয়টি ম্যাচ বাকি। প্রতি সপ্তাহান্তে তো আর মেসি জ্বলে উঠতে পারেন না। তাই প্রতিটি জয়ের জন্য বার্সার একজন ম্যাথিউ দরকার। যিনি পার্শ্বচরিত্র থেকে মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠবেন। বার্সেলোনা প্রথম সুযোগ পায় ১৩ মিনিটে।
দানি আলভেসের কাছ থেকে বল পেয়ে আচমকা দৌড়ে ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে ডান-পায়ের জোরাল শট নেন মেসি। সেন্টার গোলরক্ষক বল ঠেকানোর পর তা যায় নেইমারের পায়ে। নেইমারের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তিন মিনিট পর ডি-বক্সে বল পেয়েছিলেন লুইস সুয়ারেজ। শট নেয়ার আগেই তা বিপদমুক্ত করেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা। ২৩ মিনিটে বল পেয়েই শট নিয়েছিলেন সুয়ারেজ, এবারও গোল হয়নি। ২৯ মিনিটে বার্সেলোনার পেনাল্টি বক্সে বল পেয়েছিলেন সেল্টার নলিতো। বিপদমুক্ত করেন বার্সার গোলরক্ষক ব্রাভো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দারুণ এক শটে বল জালে জড়িয়েছিলেন নেইমার। অফসাইডের ‘বিতর্কিত’ সিদ্ধান্ত দিয়ে গোলটি বাতিল করেন রেফারি। ৫৪ মিনিটে বল পেয়েছিলেন মেসি, অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় তার শট। অবশেষে ৭৪ মিনিটে সাফল্যের মুখ দেখে অতিথিরা। জাভির ফ্রিকিকে উড়ন্ত হেডে বল জালে জড়ান ম্যাথিউ। এ জয়ে ২৯ ম্যাচে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা লড়াইয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে বার্সেলোনা। রিয়াল মাদ্রিদ চার পয়েন্ট কম নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। তৃতীয় স্থানে থাকা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অ্যাটলেটিকোর পয়েন্ট ৬২। ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.