নববর্ষে ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায় জাবিতে ৫ ছাত্রলীগ কর্মী বহিষ্কার

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পাশে (গোল চিহ্নত)
পয়লা বৈশাখে যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতা
নিশাত ইমতিয়াজ বিজয়।
নববর্ষে ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন ও তার সহপাঠীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পয়লা বৈশাখের সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরাঙ্গী এলাকায় ছাত্রলীগের সালাম-বরকত হলের কর্মীদের হাতে এ ঘটনা ঘটে।
এতে বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর শহীদ সালাম-বরকত হলের ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নিপীড়নের শিকার ওই শিক্ষার্থী। এরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কার্যকরী সদস্য নিশাত ইমতিয়াজ (৪২ তম ব্যাচ, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ), হল শাখা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক নাফিস ইকবাল (৪২ তম ব্যাচ, রসায়ন বিভাগ), ছাত্রলীগকর্মী আব্দুর রহমান ইফতি (৪৩ তম ব্যাচ, নৃবিজ্ঞান বিভাগ), রাকিব (ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ) এবং নুরুল কবির (ইতিহাস বিভাগ)। এরা সবাই ছাত্রলীগ জাবি শাখার সেক্রেটারি রাজিব আহমেদ রাসেলের আবাসিক হল শহীদ সালাম-বরকত হলের নেতাকর্মী।
অভিযোগকারী ওই ছাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘পয়লা বৈশাখের দিন সন্ধ্যায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে বিভাগের অনুষ্ঠান শেষে হলের দিকে যাচ্ছিলাম। চৌরাঙ্গী মোড়ে আসার পর সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়াই। এসময় সালাম বরকত হলের পাঁচজন ছাত্র এসে আমাদের সাথে কথা বলার জন্য দাঁড় করায়। কথা বলার এক পর্যায়ে কেউ একজন আমার ব্যাগ কেড়ে নিয়ে জঙ্গলের মধ্যে চলে যায়। আমরা ব্যাগ ফেরত আনতে গেলে তারা আমাদের ঝোপের আড়ালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এসময় তারা আমাদের দুইজনকে মারধর ও গালিগালাজ করে।’
এ ঘটনায় নিপীড়নের শিকার ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠী উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের নাদিহ আহমেদ সবুজ বলেন, ‘কথা বলার সময় ইফতি আমার বান্ধবীর ব্যাগ কেড়ে নিয়ে মোবাইল ও টাকা নিয়ে যায়। আর রাকিব তার শাড়ী ধরে টান দেয়। এরপর আমরা চিৎকার শুরু করলে তারা চলে যায়।’
দোষীদের শাস্তি দাবি করে অভিযোগকারী ওই ছাত্রী বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমি আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। অবিলম্বে এই সন্ত্রাসীদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানাই।’
অভিযোগের বিষয়ে প্রক্টর তপন কুমার সাহা বলেন, ‘আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এটা যেহেতু যৌন নিপীড়নের ঘটনা, তাই আমরা এটাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন অভিযোগ সেলের কাছে হস্তান্তর করেছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন অভিযোগ সেলের প্রধান অধ্যাপক রাশেদা আক্তার বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এরপর সেলের সভা আহ্বান করে পরবর্তী সিন্ধান্ত নেয়া হবে।’

No comments

Powered by Blogger.