সমস্যা বেশি চ্যালেঞ্জও বড় by রুদ্র মিজান

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে হলেও এ ওয়ার্ডে সমস্যা ও নাগরিক ভোগান্তির অন্ত নেই। এসব সমস্যা সমাধানে তাই প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি ও চ্যালেঞ্জও অনেক। তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ ওয়ার্ডে বেশ কয়েকজন প্রার্থী কাউন্সিলর পদে লড়তে তৎপরতা শুরু করেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাশায় ছিলেন কয়েকজন। যদিও শেষ মুহূর্তে একজন ছাড়া অন্যরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি ঘরানার প্রভাবশালী প্রার্থী যুবদলের তেজগাঁও থানার সাবেক সভাপতি নবী সোলায়মান ভূঁইয়া আছেন মূল লড়াইয়ে। এ ওয়ার্ডে বিএনপি কাউকে সমর্থন না দেয়ায় দল সমর্থিত আরও কয়েকজন মাঠে রয়েছেন। এই সুযোগে নির্বাচনী মাঠের তৎপরতায় এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের তেজগাঁও থানার সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসান ও বিএনপির এই ওয়ার্ডের সাবেক সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন। এছাড়াও ভোটারদের কাছে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন অন্য প্রার্থীরা। পূর্ব ও পশ্চিম তেজতুরী বাজার, তেজকুনীপাড়া, রেলওয়ে কলোনি, কাজীপাড়া ও সাতরাস্তার কিছু এলাকা নিয়ে গঠিত এই ওয়ার্ড। গুরুত্বপূর্ণ এই ওয়ার্ডেও রয়েছে নানা সমস্যা। এইসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। যুবদলের  তেজগাঁও থানার সাবেক সভাপতি নবী সোলায়মান ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগের তেজগাঁও থানার সাধারণ সম্পাদক শামীম হাসান ও বিএনপির এই ওয়ার্ডের সাবেক সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন ছাড়াও এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির সাবেক সভাপতি এল রহমানের স্ত্রী জোহরা রহমান, শহীদ চৌধুরী, জাতীয় পার্টির আব্দুল বারেক ও শরিফ মো. মিজানুর রহমান।
ভোটারদের ধারণা সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সাবেক কাউন্সিলর শামীম হাসান এবং যুবদলের তেজগাঁও থানার সাবেক সভাপতি নবী সোলায়মান ভূঁইয়ার মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। যদিও বিএনপি নেতা হিসেবে ইকবাল হোসেন ও বিএনপির ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি এল রহমানের স্ত্রী জোহরা রহমান মাঠে রয়েছেন। এছাড়াও কাউন্সিলর প্রার্থী শহীদ চৌধুরী নিজেকে বিএনপি কর্মী দাবি করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন জানান, একক কাউন্সিলর প্রার্থীর ব্যাপারে দল থেকে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যে কারণে ভোটার ও সমর্থকরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, দল উদ্যোগ গ্রহণ করলে দলের সিদ্ধান্ত মেনেই নির্বাচন করবো। কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের সাত জন মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। কিন্তু দলীয় উদ্যোগের কারণে ছয় জনই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তারা একাট্টা হয়ে দল সমর্থিত প্রার্থী শামীম হাসানের পক্ষে তৎপরতা চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী আবুল বাসার ভূঁইয়া ও নূর নবী জানান, দলের স্বার্থেই তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। সেই সঙ্গে দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নিয়ে যখন ভোটারদের মধ্যে নানা আলোচনা তখন ভিন্ন কথা বলেছেন  কাউন্সিলর প্রার্থী শরীফ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে কোন দল নেই। ওয়ার্ড ও ওয়ার্ডবাসীর উন্নয়নে  যে ভালো ভূমিকা রাখতে পারবেন ভোটাররা তাকেই নির্বাচিত করবেন। কাউন্সিলর প্রার্থী শামীম হাসান জানান,  তিনি পূর্বে কাউন্সিলর ছিলেন। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই ওয়ার্ডকে একটি উন্নত ও আদর্শ ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলতে চান।
এই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ওয়ার্ডের ব্যস্ততম অনেক এলাকা ময়লা-আবর্জনাপূর্ণ। স্যুয়ারেজের পানি ও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায় তেজতুরী বাজারসহ ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকা। এছাড়া পাড়া-মহল্লার অধিকাংশ সড়ক খানাখন্দ ও কর্দমাক্ত। এই এলাকার  খেলার মাঠ থাকলেও খেলার সুযোগ পায় না শিশুরা। এখানে মাদক সমস্যাও প্রকট। এসব সমস্যা সমাধানে যোগ্য ব্যক্তিকেই ভোট দিবেন এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। এই ওয়ার্ডের ভোটার ৪৬ হাজার ৪৭৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২৬ হাজার ২৯ এবং নারী ভোটার ২০ হাজার ৪৪৯।

No comments

Powered by Blogger.