মিছিলে পাকিস্তানি পতাকা ওড়ানো : কাশ্মীরের দুই মুসলিম নেতা গৃহবন্দী

গৃহবন্দী করা হল কাশ্মীরের দুই মুসলিম নেতা সঈদ আলি শাহ গিলানি ও মাসারত আলম। বৃহস্পতিবার থেকে দু'জনের বাড়ির বাইরেই পুলিস মোতায়েন করেছে জম্মু-কাশ্মীর সরকার। আজ দক্ষিণ কাশ্মীরের ত্রালে একটি জনসভা করার কথা এই দুই নেতারই।
''গিলানিকে গৃহবন্দী করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আগে থেকেই হায়দারপোরায় হুরিয়ত চেয়ারম্যানের বাড়ির বাইরে পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে।'' জানিয়েছেন কাশ্মীরের এক পুলিস আধিকারিক। আলমের বাড়ির বাইরেও একই ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে।
আর এক হুরিয়ত নেতা উমর ফারুকের চলাফেরার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে, তাঁকেও গৃহবন্দী করা হবে কিনা সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।
উপত্যকার সরকার পুলওয়ামা জেলায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জনসভার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
বৃহস্পতিবার জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী সঈদ আলি শাহ জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানো ও পাকিস্তানপন্থী স্লোগান কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
গতপরশু কাশ্মীরে একটি মিছিলে পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মাসারাত আলম। এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন ''হুরিয়ত নয়, পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়ে ছিল বাচ্চা কিছু ছেলে। তবে এই ঘটনা নতুনতো নয়, আগেও বহুবার এমনটা ঘটেছে।''
গতকাল এই মিছিলের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় কেন্দ্র সরকার। জম্মু-কাশ্মীর সরকারকে অবিলম্বে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। যদিও এখনও পর্যন্ত মুফতি সরকার এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা দেয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তায় হানিকর কিছুর সঙ্গে আপোস করা চলবে না। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজ্জু মুফতি সরকারকে আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। কাশ্মীরের বিজেপি নেতা রাম মাধব জানিয়েছেন ''এ বিষয়ে আমদের অবস্থান খুব স্পষ্ট। কোনও অবস্থাতেই পাকিস্থানপন্থী স্লোগান বরদাস্ত করা হবে না। ইতিমধ্যেই মাসারাতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। শীগগিরি গ্রেফতার করা হবে ওনাকে। এটা আমাদের সহ্যশক্তির পরীক্ষা নয়। রাজ্য সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।''
২০০৮ ও ২০১০ সালে কাশ্মীর উপত্যকায় সেনার সঙ্গে সাধারণ মানুষের তীব্র সংঘর্ষ বাঁধে। রাস্তায় যত্র তত্র সেনাকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে আম জনতা। পাল্টা লাঠি ও গুলি চালায় সেনাও। এই সংঘর্ষে কম বেশি ১০০ জনের মৃত্যু হয়। যার মধ্যে অধিকাংশই কিশোর-কিশোরী। অভিযোগ, জনতাকে খেপিয়ে তুলেছিলেন মাসারাত আলমই। পরে তৎকালীন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর নির্দেশে এই হুরিয়ত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
সূত্র : জি-নিউজ।

No comments

Powered by Blogger.